জাতীয় বাজেটে তেমনভাবে বাড়ছে না শস্য খাতের বরাদ্দ। টেকসই কৃষি ব্যবস্থার লক্ষ্যে এ খাতে মোট বাজেটের ১০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এছাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যয়বৃদ্ধি পেলেও কমছে ভর্তুকির পরিমাণ। উৎপাদন পর্যায়ে কৃষকের ব্যয় কমানো গেলে ভোক্তারাও স্বস্তিতে থাকবেন বলে মত তাদের।
দেশে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও এখনো বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান জীবনীশক্তি কৃষি। তাই জাতীয় বাজেটের নতুন পরিসংখ্যান আসলেই এ খাতে প্রত্যাশা বেশি থাকে অংশীজনদের। কিন্তু বছর ভেদে বাজেটের আকার বাড়ছে, কিন্তু অঙ্ক বাড়ছে না কৃষিতে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে কৃষিতে জাতীয় বাজেটের মোট বরাদ্দ ছিল ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। চাহিদার অনুপাতে এক দশক পেরিয়ে তা বাড়েনি, উল্টো কমে চলতি অর্থবছর দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশে। এতে সামগ্রিকভাবে কৃষির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৪ শতাংশও পূরণ হচ্ছে না।
এমন প্রেক্ষাপটে অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের জন্য এ খাতে বরাদ্দ দিতে হবে মোট বাজেটের ন্যূনতম ১০ শতাংশ। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, এছাড়া মোট বাজেটের প্রায় ৫ শতাংশ কৃষি ভর্তুকি খাতে দেয়া উচিত।
এদিকে গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের কমানো হয়েছে ভর্তুকিও। বিশ্ব দাতা সংস্থার চাপে আসন্ন বাজেটেও কমতে পারে এর পরিমাণ।
তবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রক্রিয়ায় কৃষককে সহায়তা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, কৃষিখাতে বরাদ্দ ও ভর্তুকি বাড়লে, স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন বাড়বে। অন্যদিকে কমবে কৃষি পণ্যের দাম।
বিশ্ব অস্থিরতায় অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কৃষিতে সর্বোচ্চ নজর দেয়ার দাবি খাত সংশ্লিষ্টদের। কৃষি অর্থনীতিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সামগ্রিক উন্নয়নের পরিকল্পনা আরও জোরদার করতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের জন্য সহজশর্তে কৃষি ঋণ দিতে হবে।
সমৃদ্ধ কৃষি খাত গড়ে তুলতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন লক্ষ্যপূরণ হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির প্রয়োজনীয়তা আছে বলেও মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
আমার বার্তা/এল/এমই