ঘূর্ণিঝড় দানা স্থলভাগের দিকে ধেয়ে আসছে, সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকার গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় রূপ নিয়েছে। এটি ক্রমশ স্থলভাগের দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও দেখা দিয়েছে। রাতে এ বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।
ঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, সুন্দরবন, পাবনা, লক্ষ্মীপুর, পটুয়াখালী, কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিনসহ উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। অনেক জায়গায় সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। বিকেল থেকে ঝড়ো হওয়া শুরু হয়।
আছড়ে পড়তে পারে ওডিশায়: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র বর্তমান গতিপ্রকৃতি অনুসারে আবহাওয়াবিদদের মতে, এটি আছড়ে পড়তে পারে ভারতের ওডিশা উপকূলে। এর প্রভাব পড়তে পারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকায়। তবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
৩ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ভারী বৃষ্টির বার্তা: আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া শুক্রবার খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
পায়রা থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দূরে: আবহাওয়ার ৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমদিকে এগিয়ে ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় দানায় পরিণত হয়েছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিমদিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে বুধবার আন্দামানের উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় উড়িষ্যার উপকূলে আগাত হানতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়ায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের এই সব জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।
সাগর উত্তাল: বঙ্গোপসাগরের একাংশ এখন থেকেই উত্তাল হতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার থেকেই পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার সমুদ্র আরও উত্তাল হবে।
আমার বার্তা/এমই