জীবনের ভয় নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাথুরুসিংহে
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে পালাবদলের হাওয়া ছিল দেশের প্রায় সব অঙ্গনেই। বাদ যায়নি দেশের ক্রিকেটও। ক্রিকেট বোর্ডে এসেছেন নতুন সভাপতি। নতুন দুই পরিচালকও যুক্ত হন এই সময়ে এসে। রাজনৈতিক প্রোফাইলের কারণে পরপর বৈঠক অনুপস্থিত থেকে পরিচালকের পদও হারিয়েছেন অনেকেই।
বদল এসেছে হেডকোচের পদেও। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপ জেতানো ফিল সিমন্সকে উড়িয়ে আনা হয়েছে টাইগার ক্রিকেটের গুরুর পদে। বাদ পড়েছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। যদিও পদত্যাগের আগে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শোকজ নোটিশও দিয়েছিল বিসিবি।
সেই ঘটনার অনেকগুলো দিন পর এবার মুখ খুললেন বাংলাদেশের সাবেক এই কোচ। অস্ট্রেলিয়ার ‘কোড স্পোর্টস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ দলের সাবেক কোচ এমনটাই জানিয়েছেন। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ যার সারাংশ প্রকাশ করেছে।
চন্ডিকার দাবি অনুযায়ী, অনেকটা প্রাণভয় নিয়েই বাংলাদেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন তিনি। সাধারণ অবস্থায় বাংলাদেশে নিরাপত্তার জন্য একজন গানম্যান থাকলেও শেষ সময়ে তাও পাননি। এমনকি বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মতো গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কাও ছিল লঙ্কান এই হেডকোচের। তার ভাষ্য, ‘আমার উদ্দেশে বাংলাদেশের সিইওর (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) শেষ কথাটি ছিল, আমার চলে যাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে বোর্ডের কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। “আপনার কাছে কি (বিমানের) টিকিট আছে?” এটা আমার কাছে একটা সতর্কীকরণ সংকেত মনে হলো। তখনই আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম।’
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমি সোজা ব্যাংকে গেলাম, বাংলাদেশ ছাড়ার জন্য টাকা নেয়ার চেষ্টা করছিলাম। আমি যখন ব্যাংকে, তখন টিভিতে একটি ব্রেকিং নিউজ এল— “চন্ডিকা চাকরিচ্যুত, একজন খেলোয়াড়কে লাঞ্ছিত করেছেন”। এটা দেখে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বললেন, “কোচ, আমি আপনার সঙ্গে যাব। মানুষ আপনাকে রাস্তায় দেখে ফেললে সেটা আপনার জন্য নিরাপদ হবে না।”’
দেশত্যাগের সময়কার কথা উল্লেখ করেন এভাবে, ‘এবার আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম। কারণ, আমাকে বাংলাদেশ থেকে বের হতে হবে। আমার এক বন্ধু আমাকে বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি একটি টুপি ও হুডি পরে ছিলাম, কোনো ধরনের সুরক্ষা ছিল না। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের মধ্যরাতের ফ্লাইটে আমি বাংলাদেশ ছেড়েছিলাম।’
বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতাদের মতো হাথুরুসিংহে নিজেও গ্রেপ্তারের শঙ্কায় ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন কোড স্পোর্টসের সেই সাক্ষাৎকারে, ‘বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করার জন্য তারা (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) আমাকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করতে পারত। সেখানে এমনও ঘটেছে যে আগের সরকারের একজন মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলে রানওয়েতে বিমানটি থামানো হয়েছিল এবং তারা তাঁকে বিমান থেকে বের করে এনেছিল। আমার মনে তখন এসবই ঘুরপাক খাচ্ছিল।’
আমার বার্তা/জেএইচ