হামজা আর বাংলাদেশকে অনুকরণ করতে চেয়েও ব্যর্থ হচ্ছে ভারত
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

এক হামজা চৌধুরী যেন বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবলের চিত্রটা। দেশে ফুটবল নিয়ে যেমন নতুন এক জোয়ার শুরু হয়েছে। তেমনি প্রবাসী ফুটবলারদের নিয়ে এবারে স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশের ভক্তরা। এরইমাঝে কানাডা প্রবাসী সামিত সোমের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের লিগে খেলা দুই ভাই কনর সুলিভান এবং রোনান সুলিভান।
হামজা কেন্দ্রিক এমন উন্মাদনার পর ভারতও চেয়েছিল নিজেদের প্রবাসী ফুটবলারদের দলে ভেড়াতে। বিশেষ করে এএফসি এশিয়ান বাছাইয়ের ম্যাচে হামজার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে ভারতের ফুটবল কর্তাদের। কিন্তু নিজ দেশের নিয়মের বেড়াজালেই যে আটকে যাচ্ছে ভারতের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এআইএফএফ।
ভারতের গণমাধ্যমের খবর বলছে, দেশটির আইন অনুযায়ী ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা চাইলেও ভারতের হয়ে খেলতে পারবেন না। হামজা চৌধুরী তার বাবার কল্যাণে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের দ্বৈত নাগরিক। কিন্তু ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নেই। ভারতের বংশোদ্ভূত কাউকে জাতীয় দলে খেলতে হলে সেই দেশের নাগরিকত্ব পুরোপুরি ছেড়ে আসতে হবে। আর র্যাঙ্কিংয়ে ১০০-এর নিচে থাকা ভারতের হয়ে খেলতে নিজেদের নাগরিকত্ব বিসর্জন দিতে চান না এসব ভারতীয় বংশোদ্ভূত তারকারা।
২০০৮ সালে দেশটির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আন্তর্জাতিক মঞ্চে কেবলমাত্র ভারতীয় নাগরিকেরাই ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছিল, ভারত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকতে পারে না। তাই অন্য দেশের পাসপোর্ট থাকা কেউই ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না।
ইউরোপের বিভিন্ন লিগে যেসব ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা খেলেন, তাদের ইউরোপীয় দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিলে, ফুটবল ক্যারিয়ারই পড়তে পারে হুমকির মুখে। ভারতের নাগরিকত্ব নিলে ইউরোপিয়ান ফুটবল খেলার দরজা কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তাদের জন্য বাধা হয়ে যাবে ‘ওয়ার্ক ভিসা।’ র্যাঙ্কিংয়ে নিচের দিকে থাকা দেশগুলির ফুটবলারেরা এসব উচ্চ র্যাঙ্কিংয়ের দেশগুলির ক্লাবে খেলতে পারেন না।
যদিও হামজা একইসঙ্গে ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার সুবাদে এমন জটিলতা থেকে মুক্ত। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে এই নিয়মের সুযোগে দেখা যেতে পারে আরও কিছু প্রবাসী ফুটবলারকে। সেদিক থেকে আইন পরিবর্তন না করলে ভারতকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের নিয়েই।