এয়ার টিকেট সিন্ডিকেটে জড়িত আওয়ামী নেতা জুম্মন চৌধুরী

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  বিশেষ প্রতিবেদক:

যাত্রীর নাম ছাড়া টিকিট ব্লক করে মজুদদারি করে বাজারে অতিরিক্ত চড়া দামে বিক্রি করার জন্য অত্যন্ত গোপনে দায়িত্ব পালন করে আওয়ামী লীগের তেজগাও রমনা এলাকার সাবেক এমপি ডা. এইচ বি এম ইকবাল এর ম্যানেজার জুম্মন চৌধুরী এলহাম ট্রাভেল কর্পোরেশন নামক একটি এজেন্সি তৈরি করে। এই এলহাম ট্রাভেল কর্পোরেশন ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০০০ কোটি টাকার টিকিট সিন্ডিকেট বাণিজ্য করে। ২০- ২৫ হাজার টাকার টিকেট ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে এই জুম্মন। গত বিমান মন্ত্রণালয় গত ২৭ শে ফেব্রুয়ারি জুম্মন চৌধুরীর এলহাম ট্রাভেল কর্পোরেশনকে নাম ছাড়া মজুতদারি ও সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত দামে টিকেট বিক্রি করার জন্য তার ট্রাভেলস এর লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না মর্মে নোটিশ প্রদান করে। করোনাকালীন সময়ে সে হঠাৎ করেই টিকেট সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে যায়।

জুম্মন সে নিজে আওয়ামী লীগের একজন বড় নেতা। ব্রাক্ষনবাড়ীয়া জেলার সরাইল থানায়  বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে অংশগ্রহণ করা, সভাপতিত্ব করা এবং বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বিগত ১৫ ই আগস্ট এর শোকের বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অঝরে কেঁদেছেন। জানা যায় রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান স্মৃতি সংসদের সে একজন কার্যকরী কমিটির সদস্য।

আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সগুলো থেকে টিকেট যাত্রীর নাম ছাড়া ব্লক করে মজুদারী ও কালোবাজারীর মাধ্যমে গরিব শ্রমিক যাত্রী ও প্রবাসীদের ঠকিয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যায় এই জুম্মন। ঢাকায় নয়াপল্টনে পাচটি ফ্লাট, সরাইলে বিঘায় বিঘায় জমি ও ডুপ্লেক্স বাড়ি সহ দুবাইতে টাকা পাচার করে বাড়ি করার তথ্য সকলের জানা।  অন্য ব্যক্তির নামে রেজিস্টার করা মোবাইল সিম ব্যবহার,  ফেক ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে সে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি অফিসে চাঁদাবাজি করে মর্মেও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।

ভুয়া ডকুমেন্টস বানিয়ে ভিসা সংগ্রহ করে মানব পাচারের সাথে জড়িত আছে জুম্মন।  রাশিয়াতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে কিছু বাংলাদেশীদের যাবার যে খোঁজ পাওয়া গেছে সেখানে জুম্মন জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে। 

সূত্র বলছে জুম্মনের এই অবৈধ  কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি বড় অংশ আওয়ামী ফান্ডে জমা করেন।

বিগত আওয়ামী সরকার পতনের পরে জুম্মন ভোল পাল্টিয়ে বিএনপি নেতা পরিচয় সচিবালয় তদবির বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছে। সচিবালয় বিভিন্ন ফাইলে তদবির করার জন্য তাকে দেখা যায়। তার এই কর্মকান্ড ও অপতৎপরতা অনুসন্ধানে নেমেছে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা। 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জুম্মন চৌধুরীর নয়া পল্টন অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মতিঝিল বিকন ট্রাভেলস অফিসে যেখানে তিনি ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন সেই অফিসে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় জেনে তিনি  কথা বলতে রাজি হননি।


আমার বার্তা/এমই