রাজধানীর উত্তরায় গার্মেন্টস কর্মী থেকে কোটিপতি আল আমিন
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজধানী উত্তরার পূর্ব ফায়দাবাদ বালুর মাঠ রোডে ২১১৫ নং বাড়ি, স্বপ্ন বিলাস আটতলা ভবনের একক মালিক আল আমিন। রাজউক এর নকশা বহির্ভূত ও অনুমোদহীন এই বাড়িটির বর্তমান মূল্য প্রায় ৯ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। অথচ বিগত সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বে আল আমিন ছিল একজন গার্মেন্টস কর্মী। কোথায় পেল এমন আলাদিনের চেরাগ অনুসন্ধানে বের হয়, কেঁচো খুঁড়তে যেন সাপ। ঢাকা উত্তর ডিএনসিসি ৪৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেবের ছেলে হেলালের সঙ্গে ছিল তার গভীর সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব। তবে কি ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর পুত্রের সম্পর্কের কারণে আজ আল আমিন কোটি টাকার মালিক।
সূত্র বলছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর ক্ষমতা বলেই আল আমিন আজ প্রতিষ্ঠিত এবং অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার মালিক। আলামিনের আছে গার্মেন্টস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কোন প্রকার নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে, কোন কাগজপত্র ছাড়াই আবাসিক ভবনের মধ্যে নির্মাণ করেছেন গার্মেন্টস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
আল আমিনের গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা ন্যূনতম ট্রেড লাইসেন্স টি দেখাতে সক্ষম হননি।এই বিষয়ে উত্তরা রাজউক ইন্সপেক্টর মেহেদির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত পূর্বে কিভাবে কেমন করে কি করেছে তা আমার জানা নেই, আবাসিক ভবনে গার্মেন্টসের অনুমোদন আমরা কখনোই দিতে পারি না। তার সমস্ত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে এবং অফিসে তাকে তলব করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই আল আমিনের রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী, বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল সাবেক কাউন্সিলর মোতালেব এর পুত্র হেলাল। বাহিনীর সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করত নাজমুল ও থাই সুমন। নাজমুল ও থাই সুমনকে ব্যবহার করে উত্তরা ট্রান্সমিটার এলাকায় আলামিন গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বাহিনী এবং নিজস্ব সাম্রাজ্য। বর্তমানে হেলাল ও নাজমুল কে খুঁজছে পুলিশ।যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ওসি দক্ষিন খান, মোহাম্মদ তাইফুর রহমান মির্জা বলেন, কাউন্সিলর মোতালেব সহ তার বাহিনীর অনেককেই খোঁজা হচ্ছে কিন্তু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সঠিক তথ্য প্রমাণ পেলেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমরা দেখছি।এ বিষয়ে থাই সুমনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি দৈনিক আমার বার্তার সাথে কথা বলতে আগ্রহী নন।
আল আমিনের নিজ পিতার নামে বানিয়েছেন একটি এতিমখানা। তার পিতা আজগর আলীর নামেই এই এতিমখানাটি পরিচিত।কিন্তু এতিমখানার এতিমকে দিয়ে তিনি বিভিন্ন স্থানে অর্থ তোলা দায়িত্ব পালন করান। নিজের পকেট তুষ্ট করে সামান্য কিছু অর্থ তাদের পিছনে ব্যয় করেন এমনটাই অভিযোগ লাল মসজিদের সামনে বসবাসকারী এক বাসিন্দার।
ওয়াক্ফ সম্পত্তি যা ক্রয় বিক্রয় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আলামিন মসজিদের নামে ওয়াকফকৃত সম্পত্তি নিজ সম্পত্তি বলে রিমি আক্তার ও তার ছেলে আবরার আহসানের কাছে বিক্রয় করে।
এই বিষয়ে রিমি আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার ছেলের নামে এক কাঠা ৯০ পয়েন্ট জায়গা ক্রয় করা হয় এক কাঠা জায়গার দলিল আলামিন ব্যবস্থা করে দিলেও ৯০ পয়েন্ট এখনো দলিল হয়নি। না দলিল দিচ্ছে না বর্তমান মূল দিচ্ছে, দিনের পর দিন শুধু ঘুরাচ্ছে এই প্রতারক আলামিন।
এই বিষয়ে আল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক আমার বার্তাকে বলেন, আপনারা আমার সাথে দেখা করেন দুই ভাই বসে একসাথে চা খেতে খেতে কথা বলি। পরে শুধুমাত্র বিষয়বস্তু নিয়ে তার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা যেই সমস্যার কথা বললেন তা আমি সমাধান করে দেব কিন্তু এখন আপনারা আসেন আমরা একসাথে চা খাই।
আল আমিন নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন তার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। স্বীকার করেছেন তিনি ঠিকমত বুঝতে পারেন নাই তাই রাজুউকের কোন অনুমোদন নেননি।
আমার বার্তা/এমই