বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা ভোট চান না, তাদের রাজনীতি করার দরকার নেই। তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে কেউ যদি সরে দাঁড়াতে চায়, তাদের মেসেজ দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, মানুষ তার দেশের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। আর আপনারা যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি।
আপনারা যারা ভোট চান না, তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী! নির্বাচন করবেন না। জনগণের কাছে যেতে চাইবেন না, আবার বলবেন আমি রাজনৈতিক দল। আপনি রাজনৈতিক দল হলে তো জনগণের কাছে যেতে হবে।
শনিবার (১৯ জুলাই) নগরের লালখান বাজার সংলগ্ন লেডিস ক্লাবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার ত্রিবার্ষিক সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, ঐকমত্যের কথা বলা হচ্ছে, সব ঠিক আছে। সেখানে যতটুকুতে ঐকমত্য হবে তার বাইরে সময় নষ্ট করবেন না। লন্ডনে আমাদের তারেক রহমানের সঙ্গে ড. ইউনূসের যে মিটিং হয়েছে, সেই মিটিং অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এর বাইরে আর কোনো পথ নেই।
নির্বাচিত সরকার ছাড়া মানুষের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসবে না জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, সেই পরিবর্তনের জন্য একটা নির্বাচিত সরকার লাগবে। ইন্টেরিম সরকার এগুলো করার জন্য আসেনি, আসার কথাও না। আমি তাদের দোষও দেব না। এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাদের কাজ হচ্ছে কিছু নির্বাচনি সংস্কার করে একটা নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করা। যে পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, গণতান্ত্রিক অর্ডার চালু হবে। আমরা যাদের দেশের মালিক বলে থাকি, সেই মালিকের ভোটে নির্বাচিত সংসদ হবে, সরকার হবে, সেই সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। এখন তো সেটা নেই।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বশীল সরকার নয়, এটা তাদের সীমাবদ্ধতা। সুতরাং তাদের দ্রুত নির্বাচন দিয়ে দেশটাকে তার মালিক জনগণের হাতে তুলে দেওয়া দরকার। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে চলবে। পরিবর্তন কী হবে, এ দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, একজন শিক্ষক সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গ্রামের বা শহরের মানুষ তাকে চেনে, সম্মান করে। শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক মা বাবার পরেই শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু সেই মর্যাদা আজ সমাজে অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যদি সত্যিই শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চাই, তবে প্রথমেই শিক্ষকের সামাজিক অবস্থান ও সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশে বর্তমানে শিক্ষকরা আর্থিকভাবে অবহেলিত। রাষ্ট্রের অন্য কর্মচারীরা নানা রকম সুযোগ সুবিধা পেলেও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয় না। সরকারি বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে, তা অযৌক্তিক। একই সিলেবাস, একই উদ্দেশ্যে যদি দুই পক্ষই পড়ায়, তবে আর্থিক বৈষম্য কেন থাকবে?
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম টিপুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন- শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম ভুঁইয়া। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেন।
আমার বার্তা/এমই