সংস্কারের কথা বিএনপিই সবার আগে বলেছে: মির্জা ফখরুল
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫, ২১:২৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, আমরা একসঙ্গে যেসব দল দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি, তাদের নিয়ে সংস্কারের কথা সবার আগে আমরাই বলেছি।
তিনি বলেন, সংস্কারের কথা ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০-এ বলেছিলেন। আমরা তখন যেসব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে আন্দোলন করেছিলাম, তারা সবাই মিলে ২০২২ সালে ২৭ দফা দিয়েছিলাম; যা পরে ৩১ দফায় রূপান্তর হয়। সুতরাং সংস্কারের কথা তো সবার আগে আমরাই বলেছিলাম।
মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ : ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অত্যন্ত সুচতুরভাবে একটা প্রপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে যে বিএনপি নাকি সংস্কার মানছে না এ জন্য সংস্কার হচ্ছে না। মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন হচ্ছে, সোস্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন হচ্ছে যে, বিএনপি সংস্কার মানছে না। আমি তাদের অত্যন্ত আন্তরিকভাবে বলতে চাই, দয়া করে আমাদের দফাগুলো একটু ভালো করে দেখেন। আমাদের ৩১ দফায় কী ছিল, আমাদের টিম ঐকমত্য কমিশনের কাছে গিয়ে কী বলছে, মতামত দিচ্ছে। এটা জানা দরকার, না হলে ভুল বোঝাবুঝি হবে।
অনেকগুলো ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর থাকার ব্যাপারে একমত হয়েছি, আমরা বলেছি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট হবে। আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচারব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সংস্কার আনার কথাও বলেছি। সেই বিষয়গুলোকে সেভাবে বিচার না করুন, ব্যাখা করুন। শুধু যেহেতু বিএনপি বড় দল, সেহেতু শুধু বিএনপিকেই দোষারোপ করে কথা বললে সেটা সংস্কারের জন্যে সহায়ক হবে না।
তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, আমরা গত ১৫ বছর ধরে তরুণদের ডাক দিয়েছি সভা সমাবেশের মাধ্যমে। আমরা সমাবেশ করেছি, নদী সাঁতরে পার হয়েছি। বিভাগে বিভাগে সমাবেশ করেছি, আমাদের ছেলেরা গুলি খেয়ে মরেছে। সেখান থেকে আমরা ডাক দিয়ে বলেছি, ‘কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান, হাকিছে ভবিষ্যৎ’। কারণ আমরা মনে করি, কেবল তরুণরাই পারে জীবন বাজি রেখে একটা পরিবর্তন আনতে। এই পরিবর্তন তারা এনেছে এবং এ জন্য তাদের আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।
এর আগে বিকাল ৩টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে শহীদদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়, জুলাই-আগস্টে ও গত ১৭ বছরে নিহত ও গুম হওয়াদের স্বরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়, জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়, জুলাই আন্দোলনের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এরপর গুম হওয়া পরিবারের সদস্য, শহীদ পরিবারের সদস্য, সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা এবং বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘জুলাই-আগস্ট’ গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন এই কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আদিব, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জোনায়েদ আল হাবিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমি, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, জনতার অধিকার পার্টির ইসমাঈল হোসেন সম্রাট, পিপলস পার্টির বিলকিস খন্দকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, এমএ মালিক, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মীর সরফত আলী সপু, নজরুল ইসলাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, মিফতাহ সিদ্দিকী, নিলোফার চৌধুরী মনি, ড. মাহদী আমিনসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আহত ব্যক্তি, শহিদ পরিবার ও এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ১২ দলীয় জোটের সৈয়দ এহসানুল হুদা, শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, সংগ্রাম সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসান, বাসসের চেয়ারম্যান সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ড. আব্দুল হাই সিদ্দিকী, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মো. মোস্তফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), প্রকৌশলী একেএম আমিরুল মোমিন বাবলুসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
আমার বার্তা/এমই