এখন সময় এসেছে দেশের পক্ষে দাঁড়ানোর: আন্দালিভ রহমান
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বিদেশি কোম্পানিগুলো প্রসঙ্গে বলেছেন, প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে গ্রামীণফোনের মত বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের লভ্যাংশ নিয়ে যায়। কিন্তু তারা কখনো বাংলাদেশে উন্নয়নের কথা ভেবে একটা হাসপাতালও নির্মাণ করে না। এখন সময় এসেছে দেশের পক্ষে দাঁড়ানোর। আপনাদের ইনকাম ট্যাক্স দিতে হবে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
দেশের সংকটের সময় বিদেশি কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পার্থ বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে আমাদের আবেগ কেন্দ্র করে। একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস, মা দিবস এমন কোনো দিন নাই যা আমাদের আবেগকে ছুঁয়ে যায় যা দিয়ে তারা বিজ্ঞাপন তৈরি করে না। কিন্তু আমার দেশে যখন বন্যা, কোভিড-১৯ এর মত জাতীয় সংকট হয় তখন কেন এই প্রতিষ্ঠান এগুলোকে আমরা দেখি না। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই আধুনিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমরা বানাবো না।
বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, এটা ওপেন মার্কেট এখানে আপনারা ব্যবসা করতে পারবেন। আমাদের সংবিধানে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটির (সিএসআর) বিষয়টা থাকা উচিত। আমাদের দেশে যেসব বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যায়। তাদের লাভের থেকে একটি অংশ দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে। গ্রামীণফোন বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লাভ করে নিয়ে যায়। তার ৫ শতাংশ হয় ৫০০ কোটি টাকা। আপনারা হাসপাতাল, স্কুল নির্মাণ করতে পারেন। অটিস্টিক শিশুদের জন্য কিছু করেন। আপনারা এসে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাবেন আর আমার দেশের সিএসআর বলে কিছু থাকবে না তা হবে না, এটা মানবো না। আমি চাই সংবিধানে সিএসআরের বিষয়টি থাকবে।
তিনি বলেন, আপনারা লাভ করে নিয়ে যান কিন্তু তার কিছু অংশ আমার দেশে বিনিয়োগ করুন যাতে দেশের উপকার হয়। এখানে দেশে অনেক বিদেশি কোম্পানি আছে। আমি চাই সিএসআরের বিষয়টা সামনে আসুক।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক পুনর্বাসন সম্পর্কে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। গণহত্যার জন্য যাদের অনুশোচনা নেই, তারা রাজনীতি করারও অধিকার হারিয়েছে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের ঘর থেকে সাধারণ মানুষ বের হতে দিবে না। যারা গণহত্যায় বিশ্বাস করে, সেই সমস্ত দলকে বাতিল করার জন্য সংবিধানে কমিশন থাকা প্রয়োজন। তা না হলে সামনে আবার এই ধরনের রাজনৈতিক দলের উত্থান হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান এই সংবিধান দ্বারা দেশ পরিচালিত হলে যে কোনো সরকারই ফ্যাসিস্ট হয়ে যাবে। এই সংবিধানকে ব্যবহার করে বারবার মানুষের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। যে সংবিধান মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই সংবিধান মানুষ ছুঁড়ে ফেলে দিবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও দ্বিপাক্ষিক পররাষ্ট্রনীতির চুক্তিগুলো জনগণের অগোচরে যেন না হয়, সে বিষয় উল্লেখ করে ব্যারিস্টার পার্থ বলেন, জনগণের সামনে যেকোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।
পার্থ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারটা অবশ্যই সংবিধানে ফিরিয়ে নিয়ে আসা উচিত। মাদক প্রতিরোধে সংবিধানে আরও জোরালো আইন থাকা উচিত। যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তাদের জন্য অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইন করা প্রয়োজন। যাদের কারণে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের বিচার করতে হবে।
ভবিষ্যতে যারাই বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসুক তাদের আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান ব্যারিস্টার পার্থ।
আমার বার্তা/এমই