বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস : লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয়

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:১৫ | অনলাইন সংস্করণ

  ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

বৃহস্পতিবার  বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০২৪।বিশ্বের বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর পালিত হয় ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে। এ বছর বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ডায়াবেটিস: সুস্বাস্থ্যই হোক আমাদের অঙ্গীকার’ অর্থাৎ ডায়াবেটিস ও সুস্থতার বিভিন্ন দিক যেমন– শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এবারের বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবসে এ স্লোগানটি নির্ধারণ করা হয়েছে।১৯৯১ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই দিনটিকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন ডায়াবেটিস বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রাকে এমন ভাবে প্রভাবিত করছে যা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। গত দশকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে স্থূলতা, অন্ধত্ব, হার্ট ডিজিজ ও কিডনি রোগ। ডায়াবেটিসের জটিলতা অনেক।

> যে সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে:

ডায়াবেটিস হলে সাধারণত মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে এর নির্দিষ্ট কোন লক্ষণ না থাকলেও শরীরে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি ডায়াবেটিসের জানান দিতে পারে। যেমন-

* ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা
* দুর্বল লাগা ও ঘোর ঘোর ভাব আসা
* ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
* সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে যাওয়া
* মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
* কোন কারণ ছাড়াই ওজন অনেক কমে যাওয়া
* শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা
* চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব
* বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা
* চোখে কম দেখতে শুরু করা।

>কারণ:

যেকোনো বয়সেই টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে তবে শিশু বা তরুণদের তুলনায় মধ্য-বয়সী এবং তুলনামূলক বয়স্করা এ রোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন।

অন্য যে বিষয়গুলোর জন্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়:

* নিকটজনের কারো টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলে
* প্রি-ডায়াবেটিস অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা
 * স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিন্তু ডায়াবেটিসের নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম থাকলে
* অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে
* শারীরিক পরিশ্রম কম করলে
* পূর্বে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে
* তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করলে
* খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত চিনি এবং কম
 * ফাইবারযুক্ত খাবার থাকলে
* অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে

> চিকিৎসাঃ

১ম ধাপ: রোগ নির্ণয়

টাইপ ২ ডায়াবেটিস সাধারণত কিছু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।

২য় ধাপ: ব্যবস্থাপনা/ ম্যানেজমেন্ট

যদিও আমরা জানি যে এই রোগের কোনো নিরাময় নেই, তবে ডাক্তারের নির্দেশিত জীবনধারা মেনে চললে সুস্থ থাকা সম্ভব।

নিজের অথবা আপনজনকে নিয়ে চিন্তিত? অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের মাধ্যমে পরামর্শ নিয়ে সম্ভাব্য ডায়াবেটিস নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রনে সহায়তা নিন।
তাই ।সুষ্ঠু এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। বর্তমানে ডায়াবেটিস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এজন্য সবার মাঝে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। কারণ সচেতনতাই পারে আমাদের এই বিভীষিকা থেকে দূরে রাখতে পারে।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

আমার বার্তা/এমই