ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় বিশ্বরাজনীতিতে নতুন চমক

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ

  রায়হান আহমেদ তপাদার:

যুক্তরাষ্ট্রের ৬০তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জয়ের জন্য ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোটের দরকার হলেও তার অন্তত ২৭৯টি ভোট নিশ্চিত হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কমালা হ্যারিসের পক্ষে ২২৩টি ভোট।সুতরাং সিনেটের নিয়ন্ত্রণ রিপাবলিকানদের হাতে যাওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে এবারের নির্বাচন। মার্কিন আইনসভার উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ, পূর্বাভাস বলছে উভয় ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। তাই ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে মার্কিন নাগরিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।তিনি বলেছেন, 'আমেরিকা আমাদের একটি অভূতপূর্ব এবং শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে'। বিজয়ের পর ভাষণকালে ইলন মাস্ককে তিনি 'স্টার' বলে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু ক্ষেত্রে বেশ নজর থাকবে। একটা হলো, ইউক্রেন যুদ্ধ কীভাবে থামানো যায় এবং রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক কী দাঁড়ায়। ট্রাম্প নির্বাচনকালে অনেকবার বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে এ অবস্থা কোনোভাবে ঘটত না। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপের ওপর তাঁর বিশেষ নজর থাকবে। কারণ, ইউরোপের কনজারভেটিভ পার্টিগুলো বিভিন্ন জায়গায় জিতে যাচ্ছে। তা ছাড়া অনেক দেশ যুদ্ধের ব্যাপারে নতুন করে চিন্তা করছে। সুতরাং ইউক্রেনের ব্যাপারে একটা নজর থাকবেই। দ্বিতীয় নজর থাকবে ফিলিস্তিনে, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে কোনো নতুনত্ব আনা যায় কিনা, তা নিয়েও ট্রাম্প গুরুত্ব দেবেন। তবে এ মুহূর্তে বলা মুশকিল, সেখানে কোনো ধরনের পরিবর্তন আসবে কিনা। কোনো দল যদি ইসরায়েলের ব্যাপারে নতুনত্ব আনতে পারে তাহলে তা হতে পারে রিপাবলিকান পার্টি। তবে দলের মধ্যে এখনও কিছু অস্থিতিশীলতা রয়ে গেছে। তাই পরিবর্তন আনা খুব কঠিন।

বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে এবার অনেকের আগ্রহ থাকবে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের ব্যাপারে ট্রাম্পের আমেরিকা কী সিদ্ধান্ত নেয়। মনে হয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চীনের ব্যাপারেও তাঁর নজর থাকবে। চীন, রাশিয়া ও ভারত মিলে ইতোমধ্যে একটি কাঠামো তৈরি করে ফেলেছে। সেই জায়গায় ট্রাম্পের বাড়তি একটা চেষ্টা থাকবে যেন ভারতকে আরও কাছে টানতে পারেন। আর বাংলাদেশের ব্যাপারে বলা যায়, ইতোমধ্যে রিপাবলিকান পার্টি নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে, যদিও তারা বড় রকমের কোনো সহযোগিতা করতে পারবে না। বরং এখানে নির্বাচিত সরকার যাতে তাড়াতাড়ি হয়, সেটা দেখার ব্যাপারে আরও বাড়তি কথাবার্তা বলতে পারে। যেহেতু ভারত তথা মোদির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হওয়ার বড় সম্ভাবনা রয়েছে, তার একটা প্রভাব বাংলাদেশের ওপরেও থাকবে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের এই সম্পর্ক বাংলা- দেশের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। সে জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে।সম্প্রতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি টুইট করেছেন। এ ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অব্যাহত মনোযোগ দেখা গেছে। যেমন: শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় ট্রাম্পের সভায় প্রিয়া সাহার মন্তব্য ঘিরে সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা উঠেছিল। তখন বলা হয়েছিল, এটা বিএনপি-জামায়াত লবি করছে। সুতরাং ডোনাল্ড ট্রাম্প যেমন হাসিনা সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছিলেন, এবারও তিনি একই কথা বলেছেন। এবার বলার মধ্যে কোনো রাজনৈতিক কারণ থাকতেও পারে, যদিও তিনি নিয়মিত ভাবে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে নজর রাখেন। এটা বলা যায়, এ ব্যাপারে তিনি এখনও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেননি। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যাতে ঝামেলায় না পড়ে, সেদিকে আমেরিকা আরও বড় আকারে সব সময় একটা চাপ রাখবেই।সেটা যে সরকারই থাকুক না কেন।বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নানা সম্পর্ক রয়েছে। যেমন অর্থনৈতিক, কৌশলগত, ভূরাজনৈতিক ইত্যাদি।


সুতরাং বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ইস্যু যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেখবে, সেটিও ভারতের সঙ্গে কিছুটা যুক্ত। তবে আমাদের ওপর তার কী প্রভাব পড়বে এখনও বলা কঠিন। মনে হচ্ছে, খুব একটা পরিবর্তন হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়ে আমেরিকা একই ধরনের কথা বলে থাকে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের ব্যাপারে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে গণহত্যা বলা হয়েছিল এবং বার্মা অ্যাক্ট নামে একটি বিলও পাস করা হয়েছিল। আবার তারা রোহিঙ্গা অ্যাক্টও নিয়ে এসেছে। তবে ট্রাম্পের আমলে পরিস্থিতি কী হবে, তা দেখার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ভাটা পড়তে পারে, আবার উল্টোও হতে পারে। কিন্তু এটা অনেকটা নির্ভর করে ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী দাঁড়াচ্ছে তার ওপর। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অভিবাসন প্রক্রিয়া। সেখানে মূল সমস্যা আসে  দক্ষিণ আমেরিকা থেকে। এসব অঞ্চল থেকে অবৈধভাবে লোক মার্কিন সীমান্ত অতিক্রম করে। যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী ছাড়া কোনোভাবে চলতে পারার কথা নয়। কারণ তার নতুন লোকবল দরকার পড়বে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সেটি আইনি পদ্ধতিতে করতে চায়। সমস্যা হলো, লাতিন আমেরিকা থেকে যেভাবে লোকজন আসে, তাতে সেখানে হিস্পানিক সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এমনকি অনেক জায়গায় যত লোক ইংরেজি বলে, তার চেয়ে বেশি লোক স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলে। এর মূল কারণ হলো, লাতিন আমেরিকা থেকে আসা লোকসংখ্যা। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অভিবাসনের হার এত কম যে, এ ব্যাপারে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। সেটা তেমন গুরুত্ব বহন করে না। মূলত তাঁর সমস্যা হিস্পানিক জনসংখ্যা নিয়ে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র শক্ত একটা অবস্থান নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৈধ অভিবাসন নিয়ে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেবে বলে ধারণা করা যায়। কারণ এ হার অত্যন্ত কম। বাংলাদেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। তারা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখার কৌশলের বাইরে যেতে পারবে বলে মনে হয় না।

এ অবস্থায় ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন, তাহলে বাংলাদেশ কোয়াডে যুক্ত থাকল কি থাকল না, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের খুব বেশি নজর থাকবে না। সুতরাং বাংলাদেশকে অবস্থান ঠিক রাখতে হলে নিজেদেরই চিন্তাভাবনা করতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকানপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর রাশিয়ার মতো চীনের তরফ থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো অভিনন্দন বার্তা পাঠানোর খবর পাওয়া যায়নি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন যে, মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত এবং ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করার পর চীনও নিয়ম অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো পালন করবে। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবারও নির্বাচিত হওয়ায় চীনের সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পকে নিয়ে চীনা নাগরিকদের মধ্যে বাড়তি একটা আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছিলো।অনেকেই তাকে পছন্দ করেন এবং প্রায়শই 'কমরেড ট্রাম্প' নামে ডেকে থাকেন। তবে চীনের যেসব ব্যবসায়িরা যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানি করেন, তাদের মধ্যে বেশ উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। এর কারণ নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তিনি ক্ষমতায় গিয়ে বিদেশি পণ্যের ওপর কর বাড়াবেন। ওদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর বিভিন্ন দেশের নেতারা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানালেও এখনও সে ধরনের কোনো বার্তা দিতে দেখা যায়নি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। পুতিন আদৌ আনুষ্ঠানিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানাবেন কি-না, সেটি এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারের সময় ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানার বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তবে বাস্তবে তার কথার প্রতিফলন কতটুকু দেখা যাবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।

ভোটে জিতে মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করে ফেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্ত অর্থনীতি, কর ও অভিবাসন ইস্যুগুলোতে ট্রাম্প কোন নীতি অনুসরণ করতে যাচ্ছেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়। যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন যে, ভোটে জিতলে তিনি 'মূল্যস্ফীতির অবসান ঘটাবেন এবং আমেরিকাকে ফের সাশ্রয়ী করে তুলবেন'। এ লক্ষ্যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি ও শক্তি উৎপাদনকে আরও সম্প্রসারিত করবেন বলে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, জ্বালানি খরচ যেন কম আসে, সেজন্য আর্কটিক মরুভূমির মতো এলাকাগুলোতে নতুন তেলকূপ খনন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান ট্রাম্প। ট্রাম্প বেশ কিছু ক্ষেত্রে কর কমানোর প্রস্তাব করেছেন, সংখ্যার হিসেবে যা প্রায় ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের। প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে ২০১৭ সালেও তিনি একই ধরনের একটি করনীতি গ্রহণ করেছিলেন, যা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদশালীদেরই বেশি সুবিধা দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে যে, এবারও হয়তো সেরকমই কিছু ঘটবে। ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি আমদানি পণ্যের ওপর শুল্কহার বৃদ্ধি করবেন। অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্প ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছিলেন। প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন,এবার সেটির কাজ শেষ করবেন বলে মার্কিন নাগরিকদের কথা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন যে, ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর তিনি আইন করে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের ২০শে জানুয়ারি একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শপথ গ্রহণ করবেন। সেদিন থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। রীতি অনুযায়ী, ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

আগামী ছয়ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে সিনেটে আনুষ্ঠানিকভাবে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট গণনা করা হবে। সেই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী কমালা হ্যারিস। ভোট গণনা শেষে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম ঘোষণা করবেন। ২০২০ সালে সিনেটের সেই ভোট গণনার সময়েই উত্তেজিত জনতা ক্যাপিটল হিলে হামলা করেছিল। সেই অনুষ্ঠানে ভোট গণনা পাঠ করছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।এরপরে ২০শে জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। একই সময় জো বাইডেন হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাবেন। ওই শপথ নেওয়ার আগ পর্যন্ত সময়কে বলা হয় 'রূপান্তরকালীন সময়'। ওই সময়ের মধ্যে নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের বাছাই করেন এবং পরিকল্পনা তৈরি করবেন। ২০২৪ সালের নির্বাচন তার ভাগ্যের চাকাকে এমনভাবে ঘোরাচ্ছে, যা হয় তার ভঙ্গুর বন্ধনকে সহজেই ছিন্ন করতে পারে অথবা সংগ্রাম ও অগ্নিপরীক্ষার মাধ্যমে নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পথে চালিত করতে পারে।অনেকের মতে, সামনের দিনগুলো একটি নতুন বন্দোবস্তের সূচনা ঘটাতে পারে, যেখানে প্রতিটি অঞ্চলের শক্তিকে সম্মান ও মর্যাদার চোখে দেখা হবে। অন্যদের কাছে এটি তাদের প্রিয় সবার জন্য ধ্বংসের পরিখা, রক্ত দিয়ে অর্জিত এবং প্রাচীন ও পবিত্র মাটিতে দাঁড়িয়ে কথিত শপথ দ্বারা আবদ্ধ একটি ইউনিয়নের সমাপ্তি। সেখানে শান্তি বা যুদ্ধ যা-ই বিরাজ করুক না কেন, আসন্ন যুগ এমন সব হিসাবনিকাশের প্রতিশ্রুতি দেয়, যা নিশ্চিতভাবে যে কোনো বিজয়ীর তরবারি যেমনটা করে তেমনভাবে এ ভূখণ্ডকে রূপান্তর করবে। যা-ই হোক, এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, পরবর্তি চার বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেশ ও যুদ্ধ আক্রান্ত বিশ্ব পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেন।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।

আমার বার্তা/জেএইচ