ছাত্র আন্দোলন রাজনীতিকদের জন্য সতর্কবার্তা
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১৭:২১ | অনলাইন সংস্করণ
রায়হান আহমেদ তপাদার:

২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা শুরু থেকেই সুসংগঠিত ও শান্তিপূর্ণ ছিলেন। তাঁদের আন্দোলনের গতি বাড়ছিল জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকেই। এর মধ্যে ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান একটি স্লোগানের মধ্য দিয়ে, যা কিছুক্ষণের মধ্যে বদলেও ফেলা হয়। সরকার আন্দোলনকে অপরাধীকরণের চেষ্টা করছিল। এ ঘটনায় সে রকম একটা সুযোগ তৈরি হয়। এরপর ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সাধারণ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি, রড ইত্যাদি নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো দখলে রাখা ছাত্রলীগের নেতাদের বিভিন্ন হল থেকে বের করে দেওয়া শুরু হয়।বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এক অবৈধ ও এখতিয়ারবহির্ভূত নির্দেশ তাদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাস করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেন। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি দিয়ে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড মেরে শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার মধ্যে হলছাড়া করা হয়। বের হয়েই শিক্ষার্থীরা পড়েন অপেক্ষারত সন্ত্রাসীদের হাতে এবং পথে পথে নিপীড়নের শিকার হন।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসকেরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিয়ে, তাদের নিরাপদে ক্যাম্পাস ছাড়ার সুযোগ সৃষ্টি না করে তাদের রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কক্ষ ভাঙচুর হয়েছে সে দায়ও প্রশাসনের। তারা যে বহু আগেই শিক্ষকদের হাতে থাকা উচিত এমন দায়িত্ব ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে দিয়ে বসেছিলেন, এসব তারই ফলমাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর প্রশাসকদের লজ্জা থাকলে তাদের ১৭ জুলাই পদত্যাগ করা উচিত ছিল।দেশের ছাত্ররাই অপরাজিত।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছাত্র আন্দোলনের অজেয় রূপ দেখেছি। এ সফলতা যতটা না সরকার পরিবর্তন করে দেখিয়েছে তার চেয়ে বেশি পুরো রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার বৈকল্যকে তুলে ধরে সমাজ ও রাষ্ট্রকে নাড়িয়ে দেয়ার শিক্ষা অনাদিকাল পর্যন্ত নির্দিষ্ট নাগরিক সমাজকে দিয়েছে। বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন- ২০২৪ রিজিম পরিবর্তন করে সফল হয়েছে। তবে এ আন্দোলনের প্রভাব আরো অনেক গভীর ও ব্যাপক। কেউ কেউ এ আন্দোলনকে তাৎক্ষণিক স্বার্থগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করলেও শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ স্থায়ী স্বার্থগোষ্ঠী ও রাজনৈতিক সামাজিকীকরণের অনুঘটক। তাদের ঐক্য ও আন্দোলনের বিস্তৃত ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য হলো, এ আন্দোলনে প্রাথমিকভাবে অংশ নিয়েছিলেন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এমনকি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী সময়ে সীমিত পরিসরে সরাসরি যুক্ত হয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও অন্যান্য সামাজিক শ্রেণী। চূড়ান্ত পর্যায়ে এ আন্দোলনে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থন জ্ঞাপন করেছে। কারফিউ ও পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ দ্বিতীয় ধাপে শাসক শ্রেণী ও তাদের লেজুড়বৃত্তিকারী ছাড়া বাকি সব নাগরিকের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন ও অংশগ্রহণ ছিল এ আন্দোলনে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি হলো ছাত্র-জনতার ব্যাপক প্রাণহানি। আমরা যখন বিজয় উদযাপন করছি তখনো আমাদের হৃদয় অনেক ভারাক্রান্ত। বুক পেতে দেয়া সাঈদ ও তার সহযোদ্ধা শহীদ ছাত্র-জনতাসহ ছোট ছোট নিষ্পাপ শিশুর কথা মনে পড়ছে যারা বাসায়, বারান্দায় আর বাড়ির উঠোনে শহীদ হয়েছেন, তাদের আর ফিরিয়ে আনতে পারব না। এ আন্দোলনে অনেক রাষ্ট্রীয় সম্পদও ধ্বংস হয়েছে।
তবে প্রশ্ন হলো, সাধারণ জনগণ কেন সরকারের বারবার আহ্বান সত্ত্বেও এ সংকটে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্টকারী দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধে সরকার পতনের আগে তেমন ভাবে এগিয়ে এল না?এ আলোচনার আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বিদ্যমান বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে হবে। কারণ এর সঙ্গে সরকারকে সহায়তা করতে এবং সরকার পতনের আগে তেমনভাবে দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধে সাধারণ জনগণের সংশ্লিষ্ট না হওয়ার বিষয়টি সংযুক্ত। এখানেই এ আন্দোলনের প্রধান বার্তা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য প্রধান শিক্ষা রয়েছে। প্রশাসন, কোনো কোনো নিরাপত্তা সংস্থা, সংবাদমাধ্যমসহ পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানগুলোর অত্যধিক রাজনীতিকরণের অভিযোগ এবং নিরাপত্তা সংস্থা ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কারো কারো বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ জনগণের মধ্যে তাদের নৈতিক গ্রহণযোগ্যতার একটা সংকট তৈরি করেছে। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি, দীর্ঘ সময় ধরে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, ব্যাপক বেকারত্ব, আয়বৈষম্য, সরকারি যোগাযোগের কারণে এক ধরনের নতুন ধনিক শ্রেণীর সমন্বয়ে এক নতুন সমাজ ও আর্থসামাজিক শৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে, যা অনেক নাগরিকের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। সরকারের চরিত্র কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠলে বাংলাদেশে সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে কতিপয়তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। আর এ কতিপয়তন্ত্রের সঙ্গে নাগরিকদের বড় অংশের সম্পর্ক দুর্বল ও সীমিত হয়ে পড়ে। সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠন, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা সংস্থা এবং লেজুড়বৃত্তিকারী সাংবাদিকসহ পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের ওপর সরকারের অত্যধিক নির্ভরশীলতার ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোটাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার নাগরিকদের বিক্ষোভ প্রকাশের প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুই হাজার চৌদ্দ, দুই হাজার আঠারো ও দুই হাজার চব্বিশ-এর নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় সরকারি দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রত্যক্ষ সমর্থন।
এটাও হতে পারে যে, সরকারি দলের যে অংশটি হাইব্রিড আওয়ামী লীগের কারণে দলীয়ভাবে সরকারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাদের একটি বড় অংশের নীরবতা ছিল। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থার ঘনঘন পরিবর্তন এবং প্রত্যয় পেনশন স্কিম ঘোষণার ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকসহ এ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকের সরকারের প্রতি অনাগ্রহ এক বিরাট জনগোষ্ঠীকে অদৃশ্য ঐক্যের মধ্যে ফেলেছে। যে ঐক্যের অংশ হিসেবে সবাই কোটা আন্দোলনে যোগদান না করলেও অনেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন এবং আন্দোলনকে নিজের প্রতিনিধি হিসেবে ভাবতে শুরু করেন। ফলে এ অদৃশ্য ঐক্য ক্রমান্বয়ে কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা কতিপয়তন্ত্র, তাকে রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকারের সুবিধাভোগী পেশাজীবীদের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে। এ বিশাল জনগোষ্ঠী যারা সরকারকে আর নিজের প্রতিনিধি না মনে করে সরকারের সংকটে এবং সরকার পতনের আগে তেমনভাবে দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধ করতে প্রত্যক্ষভাবে এগিয়ে আসেনি। তাছাড়া নব্য ভোগবাদী গোষ্ঠী যারা সরকারের সুবিধা লাভ করে ভোগের ব্যবস্থা করেছে, তারা সরকারকে রক্ষার জন্য ভোগ ত্যাগ করার ঝুঁকি নেয়নি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার ও সরকারি দল ও পদ-পদকলোভী পেশাজীবী নেতাদের মাধ্যমে তৈরি করা বয়ানে রাষ্ট্র, সরকার এবং সরকারি দলকে একাকার করে ফেলা। বিভিন্ন আইনের উদ্ভব, ক্রমান্বয়ে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠা সরকারি দল এবং মিডিয়াসহ পেশাজীবী নেতাদের অত্যধিক তোষামোদ, রাষ্ট্রীয় কোনো কোনো নিরাপত্তা সংস্থার কর্তাদের বক্তব্য সরকারের মন্ত্রী বা রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যাওয়া, ভিন্ন মতকে কোনো কোনো সময় রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা, স্বাধীন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা কারীদের সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে নাগরিকদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে যে দুর্বলতা সেটা রাষ্ট্র, সরকার এবং সরকার পরিচালনাকারী রাজনৈতিক দলকে একাকার করে ফেলেছে।
এর দায় শুধু সরকারেরই নয়; তোষামোদকারী ও নির্লিপ্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ও সাংস্কৃতিক কর্মী, দুর্বল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, লেজুড়বৃত্তিকারী সাংবাদিক এবং নির্লিপ্ত নাগরিকদেরই। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অত্যধিক কর্তৃত্ববাদী একনায়কতান্ত্রিক সরকারগুলোর পতন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্যাপকভাবে বিস্তৃত এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকায় কর্তৃত্ববাদী সামরিক শাসনগুলোর পতনের শিক্ষা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের গবেষণায় ইউরোপকেন্দ্রিক বিশেষ করে ব্রিটেনকেন্দ্রিক বর্ণনামূলক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বয়ানের বিপরীতে তুলনামূলক রাজনীতি অধ্যয়নের প্রায়োগিক যে কথা তৈরি হয়েছে সেখানে রাষ্ট্রকে সর্বজনীন রূপ দিয়ে একে রক্ষা করা ও স্থিতিশীল করার জন্যই রাষ্ট্র, সরকার, সরকার পরিচালনাকারী দল, ভিন্ন মতের মাধ্যম হিসেবে সংসদ ও রাজপথ এবং আরো কিছু ইনফরমাল প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করে ভাবা হয়েছে এবং উন্নত রাষ্ট্রগুলো নাগরিকদের মধ্যে এ কথা প্রচার করেছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মধ্যে এবং ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক এজেন্টগুলোর মধ্যে লড়াই হলেও রাষ্ট্র নিরাপদ থেকেছে। স্কুল, কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের ও তাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের এ শিক্ষাই দিয়ে গেল। অন্যথায় আবারো আংশিক কথা তৈরি হলে নতুন দুষ্কৃতকারী তৈরি হবে এবং আমরা সবাই অনিরাপদ হব। সত্যিকারের দুষ্কৃতকারীদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তবে সব ক্ষোভ দূর করতে হলে নাগরিকত্ব প্রকাশের অন্যতম উপায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও সরকার পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা প্রকাশের পরিবেশ রাষ্ট্র ও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। এভাবেই মুক্তিযোদ্ধা ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সব শহীদ যারা, তাদের সত্যিকার অর্থে স্মরণ করতে পারব। গভীর শ্রদ্ধায় বলতে পারব যে, তারা আমাদের মুক্তি দিতেই এমন করে অসময়ে বিদায় নিয়েছে।
তবে ইতিহাসের শিক্ষা হলো, ঘাপটি মেরে থাকা পরাজিত বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর অসত্য কথায় প্রভাবিত হয়ে আন্দোলনকারীরা সংকটকালীন জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি নেয়া তাদের সহযোদ্ধোদের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিশ্বাসের রঙ খুঁজে নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে অসংহত হয় এবং সব অর্জন নিজের বা নিজে সংশ্লিষ্ট এমন কোনো ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর মনে করে অহংকারী হয়ে উঠে নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে চায় তখন সফল আন্দোলনগুলোর লক্ষ্যও বেহাত হয়ে যায়। আমাদের বিশ্বাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে তার লক্ষ্য অর্জনেও সফল হবে। শান্তির পথে বাধা তো আরও আছে-ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অপুষ্টি। এগুলোও শান্তির পথে কম বড় বাধা নয়। পৃথিবীতে একদিকে প্রাচুর্য ও অপচয়, অন্যদিকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর করা না গেলে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস প্রত্যাশা করা যায় না। এ জন্যই ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এত জরুরি।সাম্প্রতিক ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিষয়টি ঘুরেফিরে আসে।বর্তমান সময়ে চিন্তা করে দেখুন, ইসরায়েলের অমানবিক আচরণ ও বিবেকহীন কাজ বিশ্ব মানবতাকে নাড়া দিতে পারেনি।প্রকৃতপক্ষে আশা বসবাস করে ইচ্ছা ও বিশ্বাসের মধ্যে। আশার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় ঠিক তখনই-যখন বিশ্বকে আশাহীন মনে হয়। আশা পৃথিবীতে সহজলভ্য এবং আপনি চাইলেই পেয়ে যাবেন-এমন নয়। পৃথিবীবাসীর স্বস্তি, শান্তি, কল্যাণ ও প্রগতি ত্বরান্বিত এবং নিশ্চিত করার স্বার্থে শান্তিবাদী আঙ্গিকের একটি শুভতর প্রবর্তনার বিষয়টি অবশ্যই মানবিক বিবেচনায় রাখার উদ্যোগ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তবে এটি নির্ভর করে আমরা পরস্পরকে ধ্বংসের লক্ষ্যে দেখব, নাকি সমকক্ষ মানুষ হিসেবে দেখব-এ প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাই সময় এসেছে সব ভেদাভেদ ভুলে যেদিন আমরা মানবিক এবং বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষ হব সেদিনই একটা দেশ সত্যিকারেই এগিয়ে যাবে।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।
আমার বার্তা/রায়হান আহমেদ তপাদার/এমই