সড়ক নির্মাণ খরচ কমাতে রিভিউ কমিটি গঠন করবে সরকার

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

দেশে সড়ক নির্মাণের খরচ অনেক বেশি। সড়ক নির্মাণের খরচ কমানোর উপায় বের করতে একটি ‘রিভিউ কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে মহাসড়কের সার্বিক পরিস্থিতি ও অবস্থান বিষয়ে আলোচনা সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এই তথ্য জানান।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়) শেখ মইনউদ্দিনকে কমিটির প্রধান করা হচ্ছে। কমিটিতে সড়ক পরিবহন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের রাখা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি গঠন করা হবে।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের রেট শিডিউল ও সড়কের প্রাক্কলিত ব্যয় রিভিউ করা হচ্ছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, তাঁর মতে, বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ খরচ ৩০ শতাংশ বেশি। কমিটি বিস্তারিত অনুসন্ধান ও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করবে। গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে সড়ক নির্মাণে সচেষ্ট থাকবে সরকার।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে যেসব সড়কে পণ্যবাহী যান ও মানুষ চলাচল বেশি করে, সেগুলো সংস্কারে অগ্রাধিকার পাবে। এমনভাবে সড়ক সংস্কার করতে হবে, যেন তা স্থায়ী হয়।

সড়ক খারাপ থাকার কারণে জনসাধারণকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এ জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বর্ষা শেষ হলে রাস্তা সংস্কার শুরু হবে। এ জন্য আগে থেকেই বৈঠক শুরু হয়েছে। যেসব রাস্তা পানি কিংবা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেগুলো সংস্কারের সময় কংক্রিট দিয়ে করা হবে। প্রথমে অগ্রাধিকার পাবে জাতীয় মহাসড়ক। এরপর আঞ্চলিক মহাসড়ক।

এক সাংবাদিক জানতে চান, সারাদেশে এই মুহূর্তে কী পরিমাণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত। জবাবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী জানান, তাঁর আওতাধীন দেড় হাজার কিলোমিটার রাস্তা খারাপ।

এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, যেসব রাস্তায় মানুষের যাতায়াত বেশি, কতটা ও কতটুকু খারাপ রাস্তা—এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে তা মেরামত করা হবে।

আরেক সাংবাদিক ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের বিষয়ে জানতে চান। তখন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ভারতের ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর সমস্যা জমি অধিগ্রহণে। যেখানে জমি অধিগ্রহণ করা যাচ্ছে না, সেখানে রাস্তা নির্মাণ করা যাচ্ছে না। অন্য পরিষেবা সরানো যাচ্ছে না। কুষ্টিয়া–ঝিনাইদহ সড়কের একই চিত্র। কাজে দেরি হচ্ছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার রাস্তায় নতুন করে ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে। মানুষ খুব অল্পতে অধৈর্য হয়ে যায়। একটু ঘুরে যেতে চায় না। ডাইভারশনের ফলে বেশি গাড়ি যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ঢাকার রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্পিং করা হচ্ছে। নতুন গাড়ি নামাতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। গাড়ি আমদানির নীতিতে কিছু সংস্কার আনা দরকার। গাড়ি আমদানি এক দেশ–নির্ভর হওয়ায় গুণগত মান বাড়ছে না। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আমদানির নীতি পরিবর্তন করা দরকার।

অটোরিকশা বেআইনিভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চার্জ দেয়। এটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বহির্বিশ্বের কথা ভাবলে অটোরিকশা এভাবে চলতে দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কথাও ভাবতে হবে। তাঁদেরও পরিবার রয়েছে।


আমার বার্তা/এমই