ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কিছুদিন আগে এক ভারতীয় দম্পতিকে বাংলাদেশ পুশইন করে। সেই দম্পতি এবং তাদের পরিবার তথ্য-প্রমাণসহকারে দাবি করেছে, দানিশ শেখ ও সোনালি খাতুন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা। কিন্তু দিল্লি পুলিশ তাদের প্রমাণাদি গ্রহণ না করে বিএসএফের মাধ্যমে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই দম্পতির সঙ্গে আরও তিনজনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশে পাঠানো বীরভূমের দুটি পরিবারের সদস্যরা ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে তাদের দেশে ফেরাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দিল্লি পুলিশ গত ১৮ জুন দানিশ, তাঁর স্ত্রী সোনালি ও তাদের পাঁচ বছরের পুত্র এবং সুইটি বিবি নামে এক নারী ও তাঁর দুই শিশুপুত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২৬ জুন তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দুটি হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দাখিল করা হয়েছে।
ভিডিও বার্তায় করা আবেদন সুইটি ও সোনালি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি নই। আমরা কাজের জন্য দিল্লি গিয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ আমাদের বাংলাদেশি তকমা দিয়েছে। আমরা আধার কার্ড দেখিয়েছিলাম, কিন্তু দিল্লির পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। আমরা বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা, সেখানে আমাদের পৈতৃক ভিটা রয়েছে।’ কথা বলার সময় দুই নারী ও শিশুদের হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা যায়।
তারা আরও জানিয়েছে, ‘পুলিশ আমাদের মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নিয়েছে। তারা আমাদের নির্যাতন করেছে এবং এখানে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাদের কাছে সন্তানদের খাওয়ানোর মতো কিছু নেই, থাকার জায়গাও নেই। মমতা দিদি, দয়া করে আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যান।’
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুক্রবার দুর্গাপুরে তাঁর ভাষণে অনুপ্রবেশ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার প্রসঙ্গ টেনে সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের একমাত্র অপরাধ ছিল বিজেপি শাসিত দিল্লিতে বাংলা ভাষায় কথা বলা।’
সামিরুল আরও বলেন, দিল্লিতে তাঁরা বছরের পর বছর ধরে কাজের কারণে বসবাস করছিলেন। আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি এখন অসহায়ভাবে বাংলাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ‘সে এমন একটি দেশের নাগরিক, যেখানে সে বাঙালি হওয়ার কারণে শাস্তি পাচ্ছে এবং তার নিজের সরকার তাকে রক্ষা করতে অস্বীকার করছে।’
সামিরুল ইসলাম মোদির কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের অধিকার রক্ষা করা আপনার কর্তব্য।
আমার বার্তা/এল/এমই