একজন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তকে রক্ষা করতে পারবে না ভারত
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ভারত যেন বিবেক ও নৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে—এ আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে বিশ্বাসযোগ্যভাবে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তিকে আর রক্ষা করার সুযোগ ভারতের নেই।
বুধবার (০৯ জুলাই) এক বিবৃতিতে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা এখন ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন বিবেক ও নৈতিক স্পষ্টতা নিয়ে কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের যে আইনগত অনুরোধ জানিয়ে আসছে, তা মেনে নিতে ভারত অস্বীকার করেছে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘এ অবস্থান আর গ্রহণযোগ্য নয়। আঞ্চলিক বন্ধুত্ব, কৌশলগত হিসাব কিংবা কোনো রাজনৈতিক উত্তরাধিকার—কোনো কিছুই বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যার অজুহাত হতে পারে না।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, ‘যখন বিবিসির মতো একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ উদ্ঘাটনে তাদের পূর্ণ তদন্ত সক্ষমতা কাজে লাগায়, তখন বিশ্বকে তা আমলে নিতেই হয়।’
শফিকুল আলম জানান, বিবিসির ইনভেস্টিগেশন ইউনিট বিবিসি আই এরই মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত অনুসন্ধানে যে অডিও প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, তা ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভ দমন অভিযানে শেখ হাসিনার ভূমিকার ‘চূড়ান্ত সত্য’ প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, ‘সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে—এটি এক বিষয়; কিন্তু বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত, সম্পদসমৃদ্ধ ও ফরেনসিক দক্ষতায় পারদর্শী বিবিসির মতো একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যখন স্বাধীনভাবে তদন্ত করে এসব অভিযোগ অকাট্যভাবে তুলে ধরে, তখন তা ভিন্ন মাত্রা পায়।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং, যা বিশ্বমানের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যাচাই করেছেন, তা প্রমাণ করে যে এ সহিংসতা ছিল না তাৎক্ষণিক বা দুর্ঘটনাবশত। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত, অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘এখন আর প্রমাণ শুধু গল্পনির্ভর বা পক্ষপাতদুষ্ট নয়। এটি ফরেনসিক, যাচাইযোগ্য এবং উপেক্ষা করার মতো নয়।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘যুক্তরাজ্য—যাদের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এসব বর্বরতা উন্মোচন করেছে—বাংলাদেশ ও ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমরা চাই, ভারত এই মুহূর্তের গুরুত্ব অনুধাবন করুক এবং ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখাক।’
‘বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার দাবি করে, আর ভুক্তভোগীরা প্রত্যাশা করে বিচারিক সমাপ্তি। বিশ্বকে এখন দেখাতে হবে, কোনো নেতা—তিনি যতই ক্ষমতাশালী হোন না কেন—আইনের ঊর্ধ্বে নন,’ বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আমার বার্তা/এমই