ড্রিমলাইনার নিয়ে সতর্ক বিমান, ফ্লাইটের আগে করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ইন্সপেকশন

প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫, ১৩:৩৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ উড্ডয়নের পর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ নিয়ে নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের নিজস্ব তদন্ত চলমান রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে মোট ৬টি ড্রিমলাইনার এয়ারক্রাফট রয়েছে। এই এয়ারক্রাফটগুলো নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ এ বি এম রওশন কবীর বলেন, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ বিমানের সব বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম যেমন– ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেম, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন কন্ট্রোল, ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার, হাইড্রোলিক সিস্টেম, এয়ার কন্ডিশনিং, ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম ইত্যাদির মান যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো পরিচালনা এবং ইঞ্জিনের পাওয়ার অ্যাসুরেন্স চেক সম্পন্ন করার কার্যক্রম শুরু করেছে। দুর্ঘটনার তদন্ত শেষে নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত যেসব নির্দেশনা দেওয়া হবে, তা সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য বিমানের প্রকৌশল বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে মোট ছয়টি বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি বোয়িং-৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং-৭৮৭-৯ মডেলের উড়োজাহাজ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড্ডয়ন করে। এই উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম অনুসরণ করে। এই প্রোগ্রামে প্রতিটি মেইনটেন্যান্স টাস্ক, নির্ধারিত সময়সীমা এবং পদ্ধতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। এটি বোয়িং কোম্পানির মেইনটেন্যান্স প্ল্যানিং ডকুমেন্ট, টাইপ সার্টিফিকেট হোল্ডার এবং রেগুলেটরি রিকোয়ারমেন্টের নির্দেশনা অনুসারে তৈরি এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত।

এ বি এম রওশন কবীর বলেন, এসব নির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমগুলো নির্ধারিত সময় পরপর এক বা একাধিক টাইপ রেটেড প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে বোয়িং কর্তৃক নির্ধারিত মেইনটেন্যান্স ম্যানুয়াল অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়। প্রতিটি টাস্ক সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী টাস্ক কার্ডে স্বাক্ষর করেন এবং তা পরে কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স কর্তৃক যাচাই করার পর মেইনটেন্যান্স প্ল্যানিং শাখায় সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়াও এয়ারক্রাফট হেলথ ম্যানেজমেন্ট এবং ইঞ্জিন হেলথ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে মেইনটেন্যান্স কন্ট্রোল সেন্টার এবং কেন্দ্রীয় প্রকৌশল শাখা প্রতিটি উড়োজাহাজের স্ট্যাটাস সার্বক্ষণিক রিয়েল টাইম মনিটর করে। ফলে যেকোনো সমস্যা দেখা দেওয়ার আগেই সতর্কতামূলক অ্যালার্ট পাওয়া যায় এবং সে অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন গুজরাটের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয় এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১। বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলের এয়ারক্রাফটটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। দুর্ঘটনায় একজন বাদে ওই ফ্লাইটের সব আরোহী নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনার পর ভারতে স্থানীয় বিভিন্ন অপারেটরের অধীনে বিমান পরিষেবা দেওয়া বোয়িং ৭৮৭এস মডেলের সব এয়ারক্রাফট নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও দুর্ঘটনার কবলে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বহরে থাকা সবগুলো বোয়িং ৭৮৭-৮/৯ মডেলের, বিশেষ করে যেগুলোর জিইএনএক্স ইঞ্জিন ব্যবহার করা এয়ারক্রাফটের অতিরিক্ত রক্ষণাবেক্ষণ পরীক্ষার নির্দেশ দেয় ভারতের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।


আমার বার্তা/জেএইচ