মোবাইল ফোনে স্মার্ট জীবন: দেশের ৫২ শতাংশ মানুষের নিরাপত্তা বেড়েছে
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫, ১৮:৩০ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুধু যোগাযোগ নয়, বরং স্মার্ট জীবনযাপনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। টেলিনর এশিয়ার এক গবেষণা বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি এখন নিজেদের আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ মনে করেন। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহারও দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বুধবার (৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড (বাংলাদেশ)’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টেলিনর এশিয়া। সেখানে উঠে আসে, প্রতি দুইজনের একজন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মনে করেন, ফোন সঙ্গে থাকলে তারা নিরাপদ বোধ করেন। জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে এই নিরাপত্তাবোধের হার ৫২ শতাংশ, যা থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
গবেষণায় অংশ নেওয়া ১০ জনের মধ্যে ৯ জন জানিয়েছেন, তারা মোবাইল ফোনে এআই টুল ব্যবহার করেন। প্রতি ১০ জনে ৮ জন মনে করেন, ভবিষ্যতে শিক্ষা খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বড় পরিবর্তন আনবে। বিশেষ করে অনলাইন শিক্ষা, মোবাইল ওয়ালেট এবং গতিবিধি পর্যবেক্ষণের মতো সেবা ব্যবহার করে মানুষ আরও স্মার্ট জীবনধারায় অভ্যস্ত হচ্ছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, ডিজিটাল সেবা ব্যবহার বাড়লেও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে। প্রতি ১০ জনে ৭ জন তাদের অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া পরিচয় জালিয়াতি ও ডিপফেক ভিডিওর সম্ভাবনা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা অনলাইন নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে। একইসঙ্গে কর্মক্ষেত্রে এআই টুল ব্যবহারে জেন্ডার বৈষম্যের চিত্রও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। যেখানে পুরুষদের ৪৭ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করেন, নারীদের ক্ষেত্রে এ হার মাত্র ৩৭ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ডিজিটাল ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দক্ষ করে তোলা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত হচ্ছে মোবাইল সংযোগ। মানুষের হাতে সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তারা যেন নিরাপদে ও দায়িত্বশীল হয়ে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করেন সে দিকটি নিশ্চিত করাটা আমাদের সম্মিলিত অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনীষা ডোগরা বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে রূপান্তর ঘটাতে এবং বিপ্লব আনতে সহায়ক মোবাইল প্রযুক্তি। টেলিনর এশিয়া, গ্রামীণফোনের সঙ্গে একসাথে, বাংলাদেশে মোবাইল সংযোগের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপনে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত। আমরা আনন্দিত যে, মোবাইল প্রযুক্তি দেশজুড়ে আরও মানসম্মত ডিজিটাল জীবনধারার বিকাশ ঘটিয়েছে, যেমনটি জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতামতের ভিত্তিতে দেখা যায়।
গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, আমরা ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি যেন সবাই ডিজিটাল পরিমণ্ডলে নিরাপদে বিচরণ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ‘ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড’ গবেষণাটি ২০২৪ সালের জুন-জুলাইয়ে পরিচালনা করে জিডব্লিউআই। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭টি দেশে এ জরিপ করা হয়। বাংলাদেশের ১ হাজার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মতামতের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে।
আমার বার্তা/এমই