এলজিইডির ১৯০৯ কোটি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভারি ইমারজেন্সি অ্যান্ড রেসপন বা ‘বি-স্ট্রং’ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রকল্পটির আওতায় অনিয়ম ও ব্যয়ের অতিরিক্ত হিসাবের প্রমাণ পাওয়ার পর আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
২০২৪ সালের বন্যা-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বিভাগের ছয়টি জেলা—ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য বরাদ্দকৃত ১৯০৯ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের আগেই এর নানা খাতে অস্বাভাবিক ব্যয়ের তথ্য হাতে পায় দুদক।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা জানান, প্রকল্পটির বিভিন্ন খাতে অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রমাণ মিলেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আজ অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি’। পাপন সাহা জানান, প্রকল্পটি গত ২০ এপ্রিল একনেকে অনুমোদিত হলেও এখনো বাস্তব কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে আগেই বিভিন্ন সরঞ্জামের মূল্য অতিরিক্ত দেখানোর অভিযোগ ওঠে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত স্ট্রিট সোলার লাইটের প্রতি ইউনিট মূল্য ধরা হয়েছে ৭২ হাজার টাকা। অথচ পরিকল্পনা কমিশন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এমন সোলার লাইটের প্রয়োজন নেই। প্রকল্পে ৬০টি মোটরসাইকেলের প্রস্তাব করা হলেও কমিশন থেকে মাত্র ৩৬টি ক্রয়ের সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষাপণ্য, কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ অন্যান্য খাতে যেভাবে ব্যয় দেখানো হয়েছে, তা অনিয়মের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।
সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো—মাত্র চারটি ল্যাপটপের জন্য ১১ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব, যা সন্দেহের উদ্রেক করেছে দুদকের তদন্তকারীদের মধ্যে।
এই প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে ১৬৪৭ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে বিশ্ব ব্যাংক এবং বাকি অর্থ যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।
এ প্রসঙ্গে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বর্তমানে ঢাকার বাইরে রয়েছেন। প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি; শুধু একনেকে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বরখাস্ত করা হয়। যেখানে অনিয়ম প্রমাণিত, সেখানেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলজিইডির প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন আবারও সামনে চলে এসেছে।
আমার বার্তা/এমই