শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে তালিকাভুক্ত না হলে সরকারি দরপত্রে অংশ নয়
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:২৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে তালিকাভুক্ত না হলে শিপবিল্ডার্স এবং বড় কোম্পানিগুলোকে সরকারি দরপত্র অংশ গ্রহণ করতে না দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে কেবিনেট বা উপদেষ্টা পরিষদকে চিঠি দেওয়া হবে। সরকারের অনুমোদন পেলেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) থেকে ১ কোটি ৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এই চেক এম. সাখাওয়াত হোসেনের হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আমি দেখলাম মাত্র ৫০০ কোম্পানি এনলিস্টেড (তালিকাভুক্ত)। এই ৫০০ কোম্পানি পয়সা দেয়। বাংলাদেশে ৫০০ কোম্পানি এটা তো বিশ্বাসযোগ্য না, হতেই পারে না। এতদিন অন্যরা কেন এনলিস্টেড হলো না, আমি জানি না। বাংলাদেশে বিশাল বিশাল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আছে, যারা হাজার কোটি টাকার কাজ করেছে এবং করে যাচ্ছে। তারা কেন নেই, তারা কেন তাদের প্রফিট থেকে কন্ট্রিবিউশন করে না।
‘এটা আমার কাছে একটু খটকা লাগলো, তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এদেরকেও এর আওতায় আনতে হবে। তাদের শ্রমিকদের ক্ষতি হয় বেশি, কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে মারা যান, বিকলাঙ্গ হয়। তাদের আমরা কমপেনসেশন (ক্ষতিপূরণ) দিতে পারি না, কারণ তারা এনলিস্টেড না’। বলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, আমি কেবিনেটকে লিখছি বড় কোম্পানি, শিপবিল্ডার্স যদি এনলিস্টেড না হয়, তাহলে অন্তত সরকারি কোনো দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এটা সরকার সিদ্ধান্ত নিলে তাই হবে। আর শিপবিল্ডিংয়ে যারা কাজ করছে, তারা যদি না (রাজি) হয় তাহলে আমাদের তরফ থেকে তাদের ফারদার টেন্ডারে (পরবর্তী দরপত্রে) অংশগ্রহণ করতে দেবো না। এটা মোটামুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা এখন সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস’র পক্ষ থেকে আমরা শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে ১ কোটি ৬ লাখ টাকা চেক হস্তান্তর করতে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমরা একটা উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি করতে চাচ্ছি, যেন অন্যান্য কোম্পানি এই কাজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে করে। অল্প সংখ্যক কোম্পানি এটা দিচ্ছি। আমি মনে করি এটা শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা এবং রাষ্ট্রের তরফ থেকে তার সুবিধা-অসুবিধা দেখা।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের শ্রমিকরা নানান ধরনের অসুবিধার মধ্যে থাকেন। ন্যায্য মজুরিসহ তাদের নানান ধরনের নাগরিক সুবিধাগুলো থেকে তারা বঞ্চিত। সেই জায়গা থেকে এই তহবিল একটা বড় জায়গা, শ্রমিকদের জন্য কাজ করার জন্য। শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতি আমাদের আবেদন থাকবে যেন এটার তদারকি বাড়ানো হয়। নিয়ম-নীতিমালার অধীনে অন্যান্য কোম্পানি থেকে যেন আদায় করতে পারি।
এ সময় তিনি জানান, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের পক্ষ থেকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, এই তহবিলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আছে। মূলত এগুলো আমরা বিভিন্ন ব্যাংকে ডিপোজিট রাখি। তার প্রফিট থেকে দেওয়া হয়। প্রতি বছর যে টাকাগুলো আসে, তার একটা অংশ আমরা বিতরণ করি।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান এবং বিএসসিপিএলসি-এর কর্মকর্তা মির্জা কামাল আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
বিএসসিপিএলসির শ্রমিক অংশগ্রহণ ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল প্রতিষ্ঠার পর ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে কোম্পানিটি বিধি মোতাবেক নিয়মিতভাবে মুনাফার একটি অংশ দেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে সরকার থেকে গঠিত শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে জমা দিয়ে আসছে।
আমার বার্তা/এমই