জাহাজে আগুন জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা: বিএসসি

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন তেলবাহী দুটি জাহাজে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আগুনের ঘটনায় জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টায় নাশকতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএসসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, কয়েকদিন আগে ৩০ সেপ্টেম্বর বিএসসির আরেকটি জাহাজ ‘বাংলার জ্যোতি’তে আগুন লেগেছিল। চারদিন পর আগুন লাগলো বাংলার সৌরভে। তাই আমরা ধারণা করছি, এই ঘটনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলার অপচেষ্টা। এই ঘটনায় কারা জড়িত তা শনাক্ত করা উচিত।

এর আগে, শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে বিএসসির জাহাজ এমটি ‘বাংলার সৌরভ’ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের একাধিক টাগবোট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। রাত আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এই সময় পানিতে লাফ দিয়ে সাদিক মিয়া (৬০) নামে এক নাবিকের মৃত্যু হয়।

বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেছেন, রাত সাড়ে ১২টায় জাহাজে কোনো কাজ ছিল না। হঠাৎ ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজের সম্মুখ অংশ থেকে প্রায় একই সময়ে চার জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা দেখতে পাওয়ার কথা জানান উদ্ধার হওয়া ক্রুরা। সে সময় জাহাজের কাছ থেকে একটি স্পিডবোট সরে যেতে দেখা যায় বলেও জানান তারা। যেহেতু গ্যাস ফর্ম কিংবা অন্য কোনো কারণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি। তাই আমরা ধারণা করছি, এটি নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড হতে পারে। কিন্তু সবকিছু তদন্তের পরেই জানা যাবে।

বিএসসির এমডি বলেন, এটি লাস্ট সার্ভিস হওয়ার কথা ছিল বাংলার সৌরভের। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বন্দরের ৭টি টাগবোট একযোগে কাজ করে। আগুন নেভানোর দেড় ঘণ্টা পর আবার আগুন ধরে যায়।

তিনি বলেন, বাংলার সৌরভে ১১ হাজার ৫৫টন অপরিশোধিত তেল ছিল। জাহাজটিতে ৪৮ জন ক্রু ও ওয়াচম্যান ছিল। তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে বিএসসির স্টুয়ার্ট সাদেক মিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

এদিকে, বিএসসির টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে প্রধান করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নাশকতার বিষয় নিশ্চিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অবস্থায় ৩০ হাজার টনের একটি বিদেশি জাহাজ ভাড়া করা হয়েছে। ইস্টার্ন রিফাইনারির এসপিএম পুরোদমে চালু হলে লাইটারিং কাজ বন্ধ হবে।

কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, বছরে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশনের ১২-১৪ লাখ টন অপরিশোধিত তেল পরিবহন করে বিএসসি। বড় জাহাজে বিদেশ থেকে এইসব তেল আমদানি করে বহির্নোঙরে আনা হয়। এরপর সাগরে বিএসসি’র ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভে’র সাহায্যে লাইটারিং করে কর্ণফুলী নদীর ডলফিন জেটিতে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে সরবরাহ করা হয়। ইস্টার্ন রিফাইনারি সেই তেল পরিশোধন করে।


আমার বার্তা/এমই