ছাগলকাণ্ডে এবার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪, ১৩:২২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

সাভারে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক এগ্রোর সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকার সাভারে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১ জুলাই) বেলা পৌনে ১টায় অভিযান শুরু করে দুদক।

আলোচনা আছে নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করে বিক্রি করতেন বাংলাদেশি কাউবয় নামে খ্যাত ইমরান হোসেন।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ৯ সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম গঠন করে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে জব্দ থাকা গরুগুলো দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নামমাত্র মূল্যে নিলামে কিনে নেন সাদিক এগ্রোর ইমরান।

গরুগুলো জবাই করে রমজানে সুলভ মূল্যে মাংস বিক্রি করার শর্তে ইমরানকে দেওয়া হয়েছিল। তবে ইমরান সুলভ মূল্যে বিক্রি না করেই গরুগুলো তার খামারে রেখে দেন। এছাড়াও নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরু কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার থেকে সংগ্রহ করে কোটি টাকা দাম হাকিয়ে বাজারে তোলেন।

২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে প্রকাশ্যে ইমরান এই ব্রাহমা জাতিয় নিষিদ্ধ গরু উঠিয়েছিলেন।

এর আগে, আলোচিত ছাগলকাণ্ডের থাবা পড়ে সাদিক এগ্রোতে। রাজধানীর মোহাম্মপুরে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

জানা যায়, সাদিক এগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেন। সদ্য শেষ হওয়া কোরবানির ঈদে তিনি আলোচনায় আসেন কোটি টাকার বংশীয় গরু ও ১৫ লাখ টাকার খাসি নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মারফতে খবর বের হয় খাসিটি ১২ লাখ টাকায় মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক যুবক কিনেছেন। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রেতাকে নিয়ে চলে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। শেষ মুহূর্তে জানা যায় বুকিং মানি দিলেও খাসিটি নেননি ক্রেতা।

সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক ইমরান হোসেন গবাদিপশুর খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি। আলোচনা আছে, মাঝারি খামারিদের প্রলোভন দেখিয়ে কোরবানির সময় গরুর দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকে। ফলে ক্রেতারা গরু কিনতে অনুৎসাহিত হয়ে পড়েন। এতে প্রান্তিক খামারিদের অনেক গরু অবিক্রিত থেকে যায়। পড়ে এই মাঝারি খামারিরা ওই গরু কিনে এনে এক বছর পর বেশি দামে বিক্রি করে।

এদিকে, ছাগলকাণ্ডে সব হারানো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংবাদমাধ্যমে একের এক মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের খবর বেরিয়ে আসতে থাকলে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি দেশ ছেড়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার ঘনিষ্ঠ একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা জানান, রোববার (২৩ জুন) বিকেলের দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর ভারত পালিয়ে গেছেন।

ইতোমধ্যে মতিউর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্যের একটি কমিটিও কাজ শুরু করেছে।

এর মধ্যেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জানাল সাদিক এগ্রোর অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। তাই মনে করা হচ্ছে ভাইরাল হতে গিয়ে নিজের ফাঁদে আটকে গেল প্রতিষ্ঠানটি।