সফল মানুষেরা সকালে যে কাজগুলো করেন
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১৫:০৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

আপনার সকালের রুটিন পুরো দিনের চিত্রই ঠিক করে দেয়। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম কয়েক ঘণ্টা যা করেন তা আপনার শক্তির মাত্রা, মনোযোগ, মেজাজ এবং দিনের বাকি সময়ের জন্য উৎপাদনশীলতা নির্ধারণ করে। সমস্ত সফল মানুষেরই চমৎকার সকালের রুটিন রয়েছে। তাদের কেউই দিনের শুরুটা নষ্ট করেন না। যার ফলে প্রতিটি দিন চমৎকার হয়ে ওঠে। সফল হতে চাইলে আপনাকে সকালের এই কাজগুলো মেনে চলতে হবে-
১. ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠুন
৪.৩০ থেকে ভোর ৫টার মধ্যে ঘুম থেকে ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ভালো। পৃথিবী জেগে ওঠার এবং ব্যস্ত হয়ে পড়ার আগে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আপনাকে নিজের জন্য কিছুটা শান্ত সময় দেবে। এটি বিশৃঙ্খল সকালের তাড়াহুড়া এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এতে আপনি চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করার জন্য সময় পাবেন।
২. পানি পান করুন এবং চারপাশে লক্ষ্য করা তিনটি জিনিস জোরে বলুন
পূর্ণ রাতের ঘুমের পরে আপনার শরীর স্বাভাবিকভাবেই পানিশূন্য হয়ে জেগে ওঠে। প্রথমেই এক গ্লাস পানি পান করলে আপনার শরীরে পানির পরিমাণ স্বাভাবিক হয়, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং আপনার বিপাক ক্রিয়া দ্রুত শুরু হয়। এটি মেজাজ, মানসিক স্বচ্ছতা এবং শক্তির মাত্রাও বৃদ্ধি করে। পানি পান করার পর দেয়ালের বাইরে যে তিনটি জিনিস দেখতে পান তা জোরে বলুন- যেমন ‘পাতার উপর সূর্যের আলো’ অথবা ‘একজন পাশ কাটিয়ে যাওয়া সাইকেল আরোহী’। এই সহজ কণ্ঠস্বর ভ্যাগাস স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে এবং আপনার মনকে ভৌত জগতে নোঙর করে। এটি আপনাকে অটোপাইলট থেকে বের করে আনে এবং চারপাশের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করে। এটি প্রতিটি দিন স্পষ্টতা, উপস্থিতি এবং নতুন মনোযোগ দিয়ে শুরু করার একটি শক্তিশালী উপায়।
৩. ঘণ্টাখানেক ফোন দূরে রাখুন এবং ৩টি জিনিস লিখুন
ঘুম থেকে ওঠার পরেই ফোনে হাত দেবেন না। অন্তত ঘণ্টাখানেক ফোন দূরে রাখুন। সেসময় এমন ৩টি জিনিস সম্পর্কে লিখুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। আমাদের ফোন জীবনের সবচেয়ে বড় বিক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি। আর তাই, সকালে প্রথমেই ফোন ব্যবহার করা, বার্তা, ইমেল, অথবা সোশ্যাল মিডিয়া চেক করা আপনার দিন শুরু করার সবচেয়ে খারাপ উপায়ের মধ্যে একটি। ঘুম থেকে ওঠার পর অন্তত এক ঘণ্টা ধরে আপনার ফোন ব্যবহার না করে থাকার চেষ্টা করুন। আপনার চারপাশের পরিবেশের দিকে মনোযোগ দিন। কৃতজ্ঞতা অনুশীলন করুন এবং প্রতিদিন এমন তিনটি জিনিস লিখে রাখুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। এটি আপনার মস্তিষ্ককে আপনার জীবনের ইতিবাচক দিকগুলো দেখতে সাহায্য করবে, যার ফলে মেজাজ উন্নত হবে এবং জীবনে প্রাচুর্য আসবে।
৪. বিছানা গুছিয়ে রাখুন
সকালে বিছানা গুছিয়ে রাখা তুচ্ছ মনে হলেও এই সহজ অভ্যাস অত্যন্ত শক্তিশালী। এটি শৃঙ্খলা তৈরি করে এবং আপনাকে কৃতিত্বের প্রাথমিক অনুভূতি দেয়। এই সহজ রুটিন আপনার মেজাজ উন্নত করবে, উৎপাদনশীলতাকে উৎসাহিত করবে এবং এমনকি চাপ কমাবে। কীভাবে? আচ্ছা, একটি পরিষ্কার স্থান এবং একটি পরিষ্কার মন মনোযোগ বাড়াতে কাজ করে। দীর্ঘ এবং ক্লান্তিকর দিনের পর বাড়িতে ফিরে পরিষ্কার এবং পরিপাটি বিছানায় আরাম ও স্বস্তি খুঁজে পাবেন।
৫. সূর্যের আলোতে কিছু সময় ব্যয় করুন এবং ব্যায়াম করুন
সকালে ব্যায়াম করুন। যোগব্যায়াম বা ৩০ মিনিটের জন্য হাঁটাই হোক না কেন, এটি আপনাকে সারাদিন ফুরফুরে রাখবে। ব্যায়াম স্বাভাবিকভাবেই মেজাজ উন্নত করে এবং শরীরকে আলতো করে জাগিয়ে তোলে। সূর্যের আলোতে কিছুটা সময় কাটানোর অভ্যাস আপনার মেজাজ উন্নত করার অপরিসীম ক্ষমতা রাখে, পাশাপাশি আপনার শরীরকে ভিটামিন ডি এর দৈনিক ডোজ সরবরাহ করে।
৬. পুষ্টিকর খাবার সমৃদ্ধ নাস্তা করুন
বলা হয়ে থাকে, রাজার মতো সকালের নাস্তা, রাজপুত্রের মতো দুপুরের খাবার এবং দরিদ্রের মতো রাতের খাবার খাও। আপনাকে ঠিক তাই করতে হবে। আমাদের খাবার এমন পুষ্টির উৎস হওয়া উচিত যা কেবল ইন্দ্রিয় নয়, আমাদের শরীরকেও জ্বালানি দেয়। তাই আপনার এমন পুষ্টিকর এবং সুষম নাস্তা খাওয়ার উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত যা আপনাকে দিনের বাকি সময় শক্তি যোগাবে।
দিনের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
স্পষ্ট উদ্দেশ্য বা অগ্রাধিকার নির্ধারণ সারা দিনের জন্য আপনার লক্ষ্যের উপর মনোযোগী থাকতে সাহায্য করবে। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: আজ আমি কী অর্জন করতে চাই? এক থেকে তিনটি স্পষ্ট উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন। এতে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
আমার বার্তা/জেএইচ