টিফিনে বাচ্চাদের মুখে স্বাস্থ্যকর খাবার তুলে দেয়াই ছিল আমার স্বপ্ন

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক:

আস্সালামুআলাইকুম। আমি নার্গিস শামীমা। কাজ করছি হোম মেড ফুড নিয়ে, আমার পেজ রুনিস কিচেন। কাজ করছি উত্তরা থেকে।

আমার অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। পর পর দুই বাচ্চার মা হয়ে যাই। এর মাঝেই পড়ালিখা চালিয়ে মাস্টার্স পাস করেছি। এর পর স্বামী বললো বাচ্চা আর সংসার হলো আমার সবচেয়ে বড়ো চাকরি। তাই বাইরে চাকরি করা চলবে না। তাই পড়ালিখা শেষ করে সংসারে মনোযোগ দেই।

 কিন্তু আমার রান্নার মধ্যে নতুনত্ব আনা একটা শখ ছিলো। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রান্নার অনেক অনেক কোর্স করতাম আর বাসায় এসে নিজের মতো করে রান্নার ফিউশন করতাম। সবাই রান্না খেয়ে প্রশংসা করতো তাতে আমি খুব খুশি হতাম। রান্নাটা আমার নেশার মতো ছিলো।কিন্তু এই নেশা প্রয়োজনে পেশা হয়ে গিয়েছিলো। চিন্তা করলাম যেহেতু অনেক কোর্স করেছি তাই খাবার নিয়ে কাজ করতে পারি। শুরু করলাম প্রথমে বাচ্চাদের স্কুলের টিফিন। কর্মজীবী মায়েরা তাদের বাচ্চাদের হোমমেড টিফিন দিতে পারেনা। তাই আমার বাচ্চারা যখন আমার হাতের টিফিন নিয়ে যেতো অন্য বাচ্চারা খুব পছন্দ করে খেত। তাই চিন্তা ছিলো ওদের মুখেও আমার স্বাস্থ্যকর খাবার তুলে দেয়া। শুরু হয়ে গেলো আমার পেশা।

তারপর শুরু করলাম হোম মেড ফুড সাপ্লাই। হোম মেড বাংলা, চাইনিস, থাই, ইন্ডিয়ান, সাউথ ইন্ডিয়ান, তুর্কিস, এরাবিয়ান,বেকিং আইটেম, মিস্টি, কেক, পিঠা সব অর্ডার নেয়া ও সাপ্লাই দেয়া। যেহেতু আমার এসব কোর্স করা ছিলো তাই আর কষ্ট হতো না খাবার বানাতে। নেশা থেকে পেশা হয়ে গিয়েছে একটা সময়।

শুরু করেছিলাম ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ছোট পরিসরে হোম মেড ফুডের ব্যবসা।প্রথমে নিকট আত্মীয় ও প্রতিবেশি ক্রেতা হয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষের কথা বুকে আঘাত আসলেও সহ্য করে নিজের কাজ করে গেছি মনোযোগ দিয়ে।অনেক কাছের মানুষ বলতো আমি অনেক পড়ালিখা করে এখন বাবুর্চি হয়েছি। যে যাই বলুক আমাকে কেউ এসে হেল্প করবেনা তাই ওদের কথায় কান না দিয়ে নিজে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ছিলো। ধীরে ধীরে প্রোফাইলের মাধ্যমে ক্রেতা বেড়ে চলছে। এখন আমি বাসার বাইরে একটা ব্যবসার আলাদা জায়গা করে নিয়েছি। ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক খাবার দিয়ে প্রশংসসিত হই।আমি এখন আত্মনির্ভশীল। আমি আমার পরিচয়ে চলি এখন তাতে মনে অনেক শান্তি লাগে।আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা।

আমি বেশ কিছু রান্না প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছি যেটা আমার জন্য অনেক বিশাল প্রাপ্তি। একের পর এক বিজয় প্রাপ্তির ঝুলি বেড়েছে আলহামদুলিল্লাহ।

ভবিষ্যতে আমি মনে করি রুনিস কিচেন একটা বড়ো ইন্ডাস্ট্রি হবে। সেখানে আমি অসহায় নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো সেই চিন্তা মাথায় রেখেছি। যেনো অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়াতে পারি।আল্লাহ যেনো আমার ইচ্ছা পূরণ করেন।


আমার বার্তা/এমই