এবার ভাষার বাধা দূর করতে ভারতে ২২ ভাষায় কাজ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫০ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

গত দুই বছর ধরে ভিনীত সাওয়ান্ত মুম্বাইয়ের রাস্তায় স্কুটারে ডেলিভারির কাজ করছেন। তিনি বলেন, “রাস্তার কাজ সবসময়ই চাপের, বিশেষ করে মুম্বাইয়ের মতো শহরে।”
কিন্তু কাজ শুরুর সময় ভাষাগত সমস্যাও ছিল তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তার মাতৃভাষা মারাঠি, ইংরেজি তিনি খুব অল্পই জানেন। তিনি জানান, “আমি কিছুটা বুঝতে পারি, কিন্তু পড়া খুব কঠিন।”
এই সীমাবদ্ধতা তার নতুন চাকরিতে সমস্যা তৈরি করেছিল। “প্রথমে খুব অসুবিধা হতো। সব নির্দেশ ইংরেজিতে ছিল। কিছুটা বুঝতাম, কিন্তু মারাঠিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম। তখন অন্য ডেলিভারি ড্রাইভারদের সাহায্য চাইতাম কী করতে হবে বুঝতে।”
অভিনীত জেপটো নামের একটি অনলাইন প্লাটফর্মে কাজ করেন। দ্রুত গ্রোসারি পণ্য ডেলিভারি দিতে তাকে নির্দেশনা বুঝতে সমস্যায় পড়তে হয়।
এই সমস্যা সমাধানে এক বছর আগে জেপটো ‘রেভেরি ল্যাঙ্গুয়েজ টেকনোলজিস’-এর সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে ড্রাইভারদের জন্য এআই-ভিত্তিক ভাষা অনুবাদ সেবা চালু করে।
এখন অ্যাপের মাধ্যমে ডেলিভারিম্যানরা ছয়টি ভাষার মধ্যে পছন্দমতো বেছে নিতে পারেন।
অভিনীত বলেন, “এখন আর আন্দাজ করতে হয় না। আগে পড়তে সময় লাগত এবং ভুলও হয়ে যেত। এখন যদি কাস্টমার লিখে ‘রিং বেল’, আমি সেটি মারাঠিতে পাই। আর কাউকে জিজ্ঞাসা করতে হয় না, সব পরিষ্কার।”
ভারতে ২২টি সরকারি ভাষা এবং শত শত উপভাষা রয়েছে। উচ্চমানের ডেটাসেট তৈরি, এআই ভাষা মডেল নির্মাণ এবং ২২ ভাষায় অনুবাদ সেবা চালু করার লক্ষ্যে ভারতে ‘ভাষিনী’ নামের একটি সরকারি প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
২০২২ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ইতোমধ্যেই ৩৫০টি এআই-ভিত্তিক ভাষা মডেল তৈরি করেছে। যা এক বিলিয়নের বেশি কাজ সম্পন্ন করেছে। ৫০টিরও বেশি সরকারি দপ্তর এবং ২৫টি রাজ্য সরকার এর সেবা নিচ্ছে।
সরকারি সেবা প্রদানে বহু-ভাষিক চ্যাটবট, স্থানীয় ভাষায় সরকারি স্কিম অনুবাদ— এসব ক্ষেত্রে ‘ভাষিনী’ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
‘ভাষিনী’ বিভাগের প্রধান অমিতাভ নাগ বলেন, “ভাষিনী ভারত-কেন্দ্রিক এআই মডেল তৈরি করছে। যাতে দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির সঠিক প্রতিফলন ঘটে। এর লক্ষ্য দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে গ্রামীণ মানুষরা কণ্ঠ-সক্রিয় সরকারি সেবা, আর্থিক টুলস ও তথ্য সিস্টেম নিজেদের মাতৃভাষায় পাবে।”
আমার বার্তা/এল/এমই