থাইল্যান্ডের হাতে আটক কম্বোডিয়ার ২০ সৈন্য
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৩:৩৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

সীমান্তে কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থাইল্যান্ডে আটক হওয়া ২০ জন সেনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় কম্বোডিয়া। যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টা পর থাই সেনাদের হাতে আটক হয়েছিলেন কম্বোডিয়ার ওই সেনারা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বৃহস্পতিবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা জানান, আটক সেনাদের মুক্তির বিষয়ে থাইল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে থাই গণমাধ্যমের বরাতে বলা হয়েছে, আটক সেনাদের দেশে ফেরত পাঠানোর আগে থাই সেনাবাহিনী চায় তারা যেন “আইনি প্রক্রিয়ার” মুখোমুখি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সোচেতা বলেন, “আমরা আমাদের সব সেনাকে নিরাপদে ও দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য থাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা থাই পক্ষকে আহ্বান জানাই, যেন তারা ২০ জন সামরিক সদস্যকে যত দ্রুত সম্ভব কম্বোডিয়ায় ফেরত পাঠায়।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে যুদ্ধবিরতির প্রায় আট ঘণ্টা পর কম্বোডিয়ার সেনারা থাইল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের আটক করা হয়।
বৃহস্পতিবার থাই সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র মেজর জেনারেল উইনথাই সুভারি বলেন, থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় আর্মি রিজিয়নের কমান্ডার নিশ্চিত করেছেন যে, আটক সেনাদের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পাঠানো হবে।
থাইল্যান্ডের পত্রিকা দ্য ন্যাশন জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— আইনগত প্রক্রিয়া শেষ হলেই দ্রুত তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তবে এই প্রক্রিয়া কী ধরনের হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। থাই সেনাবাহিনীর কড়া অবস্থান দেখে ধারণা করা হচ্ছে, পুরো বিষয়টি বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
থাই সরকার বুধবার জানিয়েছে, আটক সেনাদের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও সামরিক বিধান অনুযায়ী রাখা হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে রকেট ও কামানের গোলা বিনিময়ের কারণে থাই-কাম্বোডিয়া সীমান্তের দুই পাশ থেকে প্রায় ৩ লাখ মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। কৃষি জমি ও জঙ্গলঘেরা ওই এলাকায় থাই যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ার অবস্থান লক্ষ্য করে হামলাও চালিয়েছে।
থাইল্যান্ড জানিয়েছে, সংঘর্ষে তাদের ১৫ জন সেনা ও ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যা সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। অপরদিকে, কম্বোডিয়া বলেছে, সংঘর্ষে তাদের ৮ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ৫ জন সেনা নিহত হয়েছেন।
যদিও উভয় দেশই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে, মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় মঙ্গলবার যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে তা এখনও কার্যকর রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক ব্যাংকক ও নমপেনকে যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি উভয় পক্ষকে সৎভাবে মেনে চলতে হবে এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সংঘাতের মূল কারণ সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
আমার বার্তা/জেএইচ