আসামের মুখ্যমন্ত্রীর স্পর্ধা, “রংপুর আর চট্টগ্রামও বিচ্ছিন্ন হতে পারে”

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫, ১০:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বাংলাদেশের মানচিত্রের ছবি পোস্ট করে তার দাবি, বাংলাদেশের নিজস্ব দুটি ‘চিকেন নেক’ রয়েছে, যেগুলো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

এমনকি রংপুর আর চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন।

সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রোববার বাংলাদেশের উদ্দেশে ‘কড়া প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা ভারতের ‘চিকেন নেক’ করিডোর নিয়ে বারবার হুমকি দেন, তাদের মনে রাখা উচিত—বাংলাদেশের নিজস্বও দুটি ‘চিকেন নেক’ রয়েছে, যেগুলো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

তিনি দাবি করেন, “আমি শুধু ভৌগোলিক বাস্তবতা তুলে ধরছি, যেগুলো অনেকে ভুলে যেতে পারেন।”

রোববার তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে-এ মানচিত্র প্রকাশ করে জানান, বাংলাদেশে রয়েছে দুইটি সংকীর্ণ করিডোর, যেগুলোও নিরাপত্তার দিক থেকে স্পর্শকাতর। যার প্রথমটি উত্তর বাংলাদেশ করিডোর (প্রথম ‘চিকেন নেক’)। এই করিডোরটি ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের সাথে সংযুক্ত দক্ষিণ-পশ্চিম গারো হিলস পর্যন্ত বিস্তৃত।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দাবি, “এই পথ বাধাগ্রস্ত হলে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”

আর দ্বিতীয় করিডোরটি (চট্টগ্রাম করিডোর বা দ্বিতীয় ‘চিকেন নেক’) আরও ছোট—মাত্র ২৮ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে রাজনৈতিক রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করে। হিমন্তের দাবি, “এই করিডোর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রাণকেন্দ্রকে সংযুক্ত রাখে।”

তিনি বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়, “ঠিক তেমনই, প্রতিবেশী দেশের ভেতরেও রয়েছে এমন সংকীর্ণ করিডোর, যা সহজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে।”

মূলত ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরকেই বলা হয় ‘চিকেন্স নেক’। এটি মাত্র ২০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে অবস্থিত। এই করিডোর দিয়েই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যে রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ করা হয়। করিডোরটির উত্তরে নেপাল ও ভুটান, আর দক্ষিণে বাংলাদেশ।

হিমন্ত শর্মা বলেন, এই করিডোর এতটাই কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ যে এটি বিচ্ছিন্ন হলে গোটা উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে যাবে। তাই তিনি চান এই করিডোর ঘিরে আরও শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা হোক এবং বিকল্প পথগুলোর সম্ভাবনাও বিবেচনায় নেওয়া হোক—যদিও তা প্রকৌশলগতভাবে চ্যালেঞ্জিং হয়।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মোহাম্মদ ইউনূসের মতো নেতাদের এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এর পেছনে রয়েছে সুদূরপ্রসারী কৌশলগত চিন্তা।”


আমার বার্তা/জেএইচ