পরমাণু অধিকার নিয়ে আপস করবে না ইরান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ১৪:২৭ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

পরমাণু প্রকল্প ইরানের অধিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি দেশটিকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চান, তাহলে তেহরান তা কখনও মেনে নেবে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগশি আলোচিত এ ইস্যুতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে সংলাপ শুরু হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সেই সংলাপে আছে ওমান। গতকাল এ ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “যদি এই আলোচনার লক্ষ্য হয় ইরানকে তার পরমাণু অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, আমি পরিষ্কারভাবে বলছি যে ইরান তা কখনও মেনে নেবে না এবং নিজের অধিকারের ব্যাপারে আপস করবে না।”
ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাপক অস্বস্তিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ওয়াশিংটনের অভিযোগ— ইরানের পরমাণু প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য পারমাণবিক বোমা বানানো। দেশটিকে এই কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ‘জ্যাকোপা’ নামে একটি চুক্তি করেছিলেন। তবে তার উত্তরসূরী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে তার প্রথম শাসন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন।
আইআইএ-এর এই তথ্যে পর সচেতন হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ট্রাম্প নিজে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরানের সরকারও তাতে সাড়া দেয়। ইরানের চাওয়া অনুযায়ী ওমানের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়েছে ইরানের।
ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্পে মনোনিবেশ করে। গত কয়েক বছরে পারমাণবিক বোমার প্রধান উপকরণ ইউরেনিয়ামের মজুতও সমৃদ্ধ করেছে দেশটি। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরমাণু শক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। যদি এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ৬টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।
শনিবার সাংবাদিকদের আরাগশি বলেন, “ইরানের প্রতিনিধি দল খোলা মন নিয়ে দোহায় আলোচনা করতে গেছেন। এই আলোচনার লক্ষ্য যদি হয় পরমাণু অস্ত্র তৈরি থকে আমাদের বিরত রাখা, সেক্ষেত্রে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি করতে আমরা প্রস্তুত আছি।”
“কিন্তু যদি আলোচনার লক্ষ্য হয় ইরানকে তার পরমাণু অধিকার থেকে বঞ্চিত করার, তাহলে অবশ্যই আমরা আলোচনা থেকে সরে যাব। কারণ এখানে আমাদের অধিকারের প্রশ্ন যুক্ত।”
আমার বার্তা/এল/এমই