মধুমিতা হলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যবসায়িক স্বার্থে প্রযোজকদের ক্ষতি

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:০২ | অনলাইন সংস্করণ

  বিনোদন প্রতিবেদক:

ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হলের বিরুদ্ধে বারবার টিকিট ব্ল্যাকের অভিযোগ ওঠার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরবতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমার প্রদর্শনকালে টিকিটের বেআইনি মূল্যবৃদ্ধি এবং ব্ল্যাক বিক্রির অভিযোগ উঠেছে হলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের বিরুদ্ধে।

সরেজমিন তথ্য অনুযায়ী, সরকারি অনুমতি ছাড়া মধুমিতায় ডিসি (ডিলাক্স ক্লাস) টিকিটের দাম ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা এবং রিয়াল টিকিট ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, সিনেমা টিকিটের মূল্য পরিবর্তনে জেলা তথ্য অফিসের অনুমতি আবশ্যক হলেও মধুমিতা কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি।

আরও গুরুতর বিষয় হলো, শো প্রতি প্রায় ১০০টি টিকিট ব্ল্যাকে ছাড়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব টিকিট ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ব্ল্যাকারদের মাধ্যমে, যেখানে মূল দর্শক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং প্রযোজকরা বঞ্চিত হয়েছেন বাড়তি আয়ের ন্যায্য অংশ থেকে।

‘বরবাদ’ সিনেমার প্রযোজকের ভাষ্যমতে, “উপচে পড়া দর্শক থাকলেও আমার কোনো লাভ নেই, বরং হল মালিকরা বেআইনি আয় করছে যার কোনো অংশ আমি পাই না। আমি একাধিকবার প্রদর্শক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শুধু মধুমিতাই নয়, সাভার সেনা, উলকাসহ আরও কয়েকটি হলে একই অনিয়ম হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রদর্শক সমিতির সেক্রেটারি আওলাদ হোসেন উজ্জল বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং ইতোমধ্যে কয়েকটি হলে আমাদের ভ্রাম্যমাণ টিম পাঠিয়েছি। মৌখিকভাবে সতর্কও করেছি। তবে প্রযোজকদেরও নিজস্ব লোকবল থাকা উচিত, তাহলে টিকিট মনিটর করা সহজ হয়।”

বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, টিকিট ব্ল্যাক করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ এই অনিয়ম বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে, যা মধুমিতার ‘অতি পুরনো অভ্যাস’ বলে স্বীকার করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাচীন হল মালিক। এমনকি অভিযোগ রয়েছে, ব্ল্যাকারদের থেকে কমিশন নেওয়া হয় – যা পুরো চিত্রটিকে অপরাধ চক্রে পরিণত করেছে।

মধুমিতার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আমার বার্তা/মেহনাজ খান/এমই