অফডকের শুল্কে জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ২১টি বেসরকারি অফডকে নতুন শুল্ক কার্যকরের পর তৈরি হয়েছে মারাত্মক জটিলতা। বন্দর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এসব অফডক ৩০ থেকে ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি ট্যারিফ আদায় করছে বলে অভিযোগ তুলেছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।
এতে মুখোমুখি অবস্থানে গেছে বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর (আইসিডি) মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা), বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং শিপিং এজেন্টরা।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কনটেইনার স্টাফিং, গ্রাউন্ড রেন্ট, লিফট অফ-লিফট অন, ডকুমেন্টেশন ও বন্দর থেকে অফডকগামী পরিবহনের ট্যারিফ কার্যকর করে ২১টি বেসরকারি অফডক। আর এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানামুখী জটিলতা। তবে অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই এই বাড়তি শুল্ক আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী নেতাদের। তাদের আশঙ্কা, নতুন ট্যারিফ কার্যকর হলে বছরে অতিরিক্ত অন্তত এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, ‘ট্যারিফ ৬৩ শতাংশ বাড়ানোয় পরিবহন খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। প্রতিটি খাতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল।’
২০১৬ সালের আইসিডি নীতিমালা অনুযায়ী বিকডা কোনো ট্যারিফ কার্যকরের আগে শিপার, কনসাইনি, এমএলও, শিপিং এজেন্ট ও ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া উপেক্ষা করেই ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জটিলতা নিরসনে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
একই সঙ্গে জটিলতা নিরসনে দ্রুত স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্তও নিয়েছে তারা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সিনিয়র সচিবকে জানিয়েছি। সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসা জরুরি।’
অন্যদিকে বিকডার দাবি, গত ৯ বছরে ট্যারিফ নির্ধারণে কোনো কমিটি গঠন হয়নি, কিংবা কোনো কার্যক্রমও দেখা যায়নি। ফলে হঠাৎ করেই ট্যারিফ আদায় বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা নেই। ২০২১ সালে জ্বালানির দাম বাড়ায় ট্যারিফ ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। এবার শ্রমিক-মজুরি বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ, মূল্যস্ফীতি এবং টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ট্যারিফ সমন্বয় করতে হয়েছে। বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, ‘এই ট্যারিফ কার্যকর না করলে ডিপোগুলোর পক্ষে কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না।’
১৯৯৬ সালে খালি কনটেইনার উঠানামার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করা অফডকগুলো বর্তমানে আমদানি করা ৬৫ ধরনের পণ্য ডেলিভারির অনুমতি পেয়েছে। বছরে প্রায় ৭ লাখ ৭৭ হাজার রফতানি কনটেইনার এবং ২ লাখ ৬৫ হাজার আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে এসব বেসরকারি অফডক। আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের পাশাপাশি বন্দরের কাজকে গতিশীল রাখতে অফডকগুলোর বিকল্প নেই। তবে শুল্ক নির্ধারণে ব্যবসাবান্ধব ও সহনশীল অবস্থান নেয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
আমার বার্তা/এল/এমই