আমদানির ঘোষণায় পাইকারিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে সরকার। এর পরদিনই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭৫ টাকা। গতকাল তা কমে দাঁড়ায় ৬৫-৬৬ টাকায়।
তবে খুচরা বাজারে দাম এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে—প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। পাইকারদের দাবি, কৃষক ও জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা তাদের মজুত থেকে বাজারে পেঁয়াজ ছাড়ছিলেন কম। এর কারণেই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দাম বেড়েছে।
ঢাকার অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার 'শ্যামবাজার পেঁয়াজ আড়তদার সমিতি'র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মাজেদ বলেন, 'তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চাহিদা মেটানোর মতো যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ বাজারে নেই।'
দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অন্যতম জেলা ফরিদপুরে আমদানির ঘোষণার পর প্রতি মণ (৪০ কেজি) পেঁয়াজের দাম ২০০-৩০০ টাকা কমেছে। মঙ্গলবার প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ছিল ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা, যা গতকাল নেমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
ফরিদপুরের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র বাজার কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, কৃষক ও বড় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে চাহিদা মেটানোর মতো পেঁয়াজ সরবরাহ করছেন না।
রাজধানীর কাঁচাবাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৮৫-৯০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর দাম ৬০-৬৫ টাকা ছিল বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার ঢাকায় খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৭৫-৮৫ টাকা, যা এক মাস আগের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি। এক বছর আগে এই দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা।
গত এপ্রিলে কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছিলেন, কৃষকদের জন্য ন্যায্য খুচরা মূল্য হওয়া উচিত কেজিপ্রতি ৬০ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে কৃষকদের উৎপাদন খরচ ছিল কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪৮ টাকা। ডিসেম্বরে বীজ বোনা হয় এবং মার্চ বা এপ্রিল থেকে বাজারে পেঁয়াজ আসা শুরু হয়।
অনেক ভোক্তা বলছেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২০-২৫ টাকা বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই, বিশেষ করে যেহেতু পেঁয়াজ তোলা শেষ হয়েছে এপ্রিলেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গত মৌসুমে ৩৯ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রাক্কলন করেছে, যা দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। তবে সংগ্রহ-পরবর্তী ক্ষতি পোষাতে আরও ৬-৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজন হতে পারে।
গত মঙ্গলবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, স্থানীয় বাজারে দাম কমাতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যেখান থেকে কম দামে পেঁয়াজ পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই আমদানি করব। দাম কমানোর জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই আমদানি করা হবে। এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট দেশ ঠিক করা হয়নি।
আমার বার্তা/জেএইচ