শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে গো-খাদ্য, কাঠের গুঁড়ি-চাটাইয়ের ব্যবসা
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৫, ০৬:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

শেষ মুহূর্তে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে চলছে জমজমাট বেচাকেনা।
পাশাপাশি নগরীর পাড়া-মহল্লায় পশুর খাবার ও পশু বানানোর সরঞ্জাম নিয়ে নগরজুড়ে বসেছে মৌসুমি ব্যবসা। বিশেষ করে গো-খাদ্য, কাঠের গুঁড়ি ও চাটাইয়ের রমরমা ব্যবসা চলছে।
শুক্রবার (৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট ও মহল্লার অলিগলি ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
জনগণকে সেবা দিয়ে কিছুটা অর্থ উপার্জন করাই তাদের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন এসব মৌসুমি ব্যবসায়ী। প্রতি বছর এই সময় কোটি কোটি টাকার বিক্রি হয় বলেও জানান তারা।
তবে গো-খাদ্যের দাম আগের তুলনায় অনেক বাড়তি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
দেখা যায়, শেষ মুহূর্তে রাজধানীর প্রতিটি মহল্লায় জমে উঠেছে গো-খাদ্য, কাঠের গুঁড়ি ও চাটাইয়ের মৌসুমি ব্যবসা। এগুলোর দাম নিয়ে ক্রেতাদের কারও কারও মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও ঘরের পাশ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পেরে অনেকেই আনন্দিত।
তবে দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় গো-খাদ্য, কাঠের গুঁড়ি ও চাটাইয়ের দাম পাইকারি বাজারে কিছুটা বেড়েছে। ফলে তাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শেওড়াপাড়া এলাকায় কাঠের গুঁড়ি ও চাটাই বিক্রেতা ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের চেয়ে বেশি দামে কিনেছি, তাই কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি আইটেমের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার এখানেই কয়েক ধরনের কাঠের গুঁড়ি আছে। ভালোটা নিতে গেলে দাম একটু বেশি পড়ছে। তবে দামের জন্য ক্রেতারা ঘুরে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনে কাঠের গুঁড়ি বিক্রেতা রমজান আলী বলেন, গাছের গুঁড়ি তৈরিতে তেঁতুল গাছের কাঠকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ অন্য কাঠের তুলনায় তেঁতুল কাঠের গুঁড়ি দা-ছুরির আঘাতে নষ্ট হয় না। তাই এর চাহিদা ব্যাপক, দামও কিছুটা বেশি। ক্রেতারা কেনার আগে তেঁতুল গাছের গুঁড়ি কিনা দেখেশুনে কেনেন। বিক্রেতারাও তেঁতুল গাছের গুঁড়ি হাঁকডাক করেই বিক্রি করেন। আমি প্রতিটা গাছের গুঁড়ি ছোটগুলো ৪০০ ও বড়গুলো ৬০০ টাকা বিক্রি করছি।
ফলের ব্যবসা বন্ধ রেখে তিনদিনের জন্য মৌসুমি এই ব্যবসা করছেন শেওড়াপাড়ার মোহাম্মদ বাবু মিয়া। দুই দশক ধরে এই সময়টায় তিনি কাঠের গুঁড়ি, চাটাই ও গো-খাদ্য বিক্রি করেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দুই দশকের বেশি সময় ধরে আমি ঈদের আগে এই সিজনাল ব্যবসা করি। মহল্লাবাসী আমার কাছ থেকেই এসব কেনেন। দামের জন্য তেমন আটকায় না। ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি, আর কম। ক্রেতারা ভালো জিনিস নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে।
শুধু পাড়ামহল্লা নয়, গরুর হাটগুলোর সামনেও গো-খাদ্যের রমরমা ব্যবসা চলছে। গরু বেপারিরা দামের দিকে দেখছেন না। হাতের কাছে খাদ্য কিনতে পারায় তারাও সন্তুষ্ট।
এবছর প্রতি কেজি ডালের ভুসি ৯০-১০০ টাকা, কুড়া ৬০ টাকা, গমের ভুসি ১০০ টাকা, চালের খুদ ৭০ টাকা ,গুঁড়া মসুর ডাল ১০০ টাকা, ভুট্টার ভুসি ৮০ টাকা এবং লবণ ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর আমরা এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকি। তিন চারদিনের ব্যবসায় আমাদের ভালো উপার্জন হয়। মৌসুমি এই ব্যবসা অর্থনীতিকে গতিশীল করেও বলে তারা উল্লেখ করেন।
আমার বার্তা/এল/এমই