আইএমএফের ঋণে রিজার্ভ বেড়ে ২৬.৫ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৪, ০৯:৪০ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার) ছাড় ক‌রে‌ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (আইএমএফ) ।

এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া, বিশ্ব ব্যাংক ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) বি‌ভিন্ন আর্থিক সহায়তা ঋণের আরও ৯০ কো‌টি ডলার পে‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ। সব মি‌লি‌য়ে বৃহস্প‌তিবার রাতে ২০১ কো‌টি ডলা‌রের ঋণ সহায়তার অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে।

বৃহস্প‌তিবার (২৭ জুন) রা‌তে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থে‌কে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২৬ জুন পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৪৭  বিলিয়ন ডলার। আইএমএফসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার ঋণ যুক্ত হওয়ায় বৃহস্প‌তিবার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আর বিপিএম-৬ হিসা‌বে আছে প্রায় সা‌ড়ে ২১ বি‌লিয়ন ডলার।

এর আগে গত সোমবার (২৪ জুন) ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কি‌স্তি দেওয়ার অনুমোদন হয়।

আইএমএফের ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।

বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতিও বেড়েছিল বাংলাদেশের। ডলারের বিপরীতে টাকা দর অবনমন হতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে।

তখন দ্রুত ক্ষয় হতে থাকা রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়ে আবেদন করে ২০২২ সালের জুলাইতে। বিভিন্ন ধাপের আলোচনার পর ওই ওই বছরের নভেম্বরে ঋণ চুক্তি অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।

প‌রে ২০২৩ সা‌লের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিন দিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার  ছাড় করে সংস্থাটি। এর পর গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু  রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন ও আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১১ কো‌টি ৫০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।

বাংলাদেশের অনুরোধে চতুর্থ কিস্তির জন্য আগামী জুন শেষে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ৫.৩৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক শর্ত পূরণ করার পথে থাকলেও ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর থেকে রিজার্ভের ত্রৈমাসিক কোনো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। সরকারের অনুরোধে আইএমএফ পরে সংশোধন করে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়।

 

আমার বার্তা/এমই