বাংলাদেশের দুর্নীতি কমাতে যে পরামর্শ দিলো আইএমএফ

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ১৮:০২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এরই মধ্যে দুর্নীতি রোধে সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের তথ্য নেওয়া এবং তার নিয়মিত হালনাগাদ করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বাংলাদেশকে দেওয়া ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদনের পর আইএমএফের প্রকাশিত স্টাফ রিপোর্টে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরাও জাতীয় সংসদে প্রশ্ন তুলে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

আইএমএফ বলেছে, দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে, এ বিষয়ে অসম্মতি (নন-কমপ্লায়েন্স) দেখা দিলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ নিয়মিত হালনাগাদের জন্য একটি মানসম্মত পন্থা অবলম্বন করে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ ঘোষণার প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে।

বহুপাক্ষিক ঋণদানকারী সংস্থাটি আরও বলেছে, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির ক্ষেত্রে সুশাসনের উন্নয়ন এবং দুর্নীতি রোধ ব্যাপক অবদান রাখবে। রাজস্ব ও আর্থিক সুশাসনের উন্নতি, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং নীতি কাঠামো শক্তিশালীকরণও উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

১৯৭৯ সালে পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান চালু হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। তবে চার দশকের বেশি সময় ধরে নিয়মটি পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি।

অতীতে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি মন্ত্রণালয় তাদের অধীনে কর্মচারীদের কাছে সম্পদের বিবরণী চেয়েও তেমন সাড়া পায়নি।

সরকারি কর্মচারী আইন (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি ১২ ও ১৩ অনুসারে সরকারি কর্মচারীর স্থাবর সম্পত্তি অর্জন, বিক্রি ও সম্পদ বিবরণী জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি, জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটসহ যেকোনো সম্পদ কিনতে বা বিক্রি করতেও সরকারের অনুমতি নিতে হয় তাদের। সম্পদ কেনার ক্ষেত্রে টাকার উৎস সম্পর্কেও জানাতে হয়। আবার সম্পদ বিক্রি করা হলে দাম জানাতে হয়। কারণ, কমবেশি দামে সম্পদ বেচাকেনা হলো কি-না, তা যাচাই করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হলে সে সময় সব কর্মচারীই তা দিয়েছিলেন। নানান দিকে আলোচনা উঠলে ২০১৫ সালে আরেক দফা সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলে সরকার। তখন গুটিকয়েক মন্ত্রণালয় তাদের নিয়ন্ত্রিত কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিতে পারলেও বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়।


আমার বার্তা/এমই