পায়রার ভাঙনে ‘মানচিত্র থেকে’ বিলীনের পথে চান্দখালী গ্রাম
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ৩নং ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের চান্দখালী গ্রাম। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে জমিজমা আর ঘরবাড়ি, নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন এখানকার বাসিন্দারা। তাই সহায়তা নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে বেড়েই চলেছে ভাঙন। এক বছরের ব্যবধানে চান্দখালী গ্রামে নদীতে বিলীন হয়েছে ৫ একরের বেশি ফসলি জমি, শতাধিক ঘরবাড়ি, দুটি মন্দির, তিনটি মসজিদ, একটি সরকারি আবাসনসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগীরা।
চান্দখালী গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব ওমেশ করাতি প্রায়ই পায়রার তীরে বসে প্রিয় স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে অতীত স্মৃতি রোমন্থন করেন। সময় সংবাদকে তিনি বলেন, ‘গত ৪০ বছরে পাঁচবার পায়রা আমার জমিজমা আর ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। সবশেষ ২০২১ সালে বাড়ির সঙ্গে স্ত্রীর কবরও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সন্তানদের সহায়তায় এখন যে বাড়ি করেছি সেটিও হুমকির মুখে। বারবার হারিয়েছি জীবিকার অবলম্বন।’
দুই বছর আগে দক্ষিণ চান্দখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেঙে নদীতে চলে যাওয়ার পর অন্যত্র স্থানান্তর করা হলেও সেটিও এখন ঝুঁকির মুখে। একইভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে দুটি আবাসন প্রকল্প, অসংখ্য ঘরবাড়ি, দোকানপাট, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার, পান বাজারসহ বহু স্থাপনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় বারবার অস্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। এতে শুধু অপচয় হচ্ছে সরকারি তহবিল। তাদের দাবি, স্থায়ী সমাধান ছাড়া এই বিপদ থেকে মুক্তি মিলবে না।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব জানান, এরই মধ্যে অস্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালী জেলায় মোট ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ২২ কিলোমিটার এবং পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত ৬ কিলোমিটার।
আমার বার্তা/এল/এমই