ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

দেশের অন্যতম ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত রাত থেকে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাতভর আটকে ছিল শত শত যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে পরিস্থিতি আরও তীব্র হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ওই ট্রাক রাস্তার মাঝে আটকে থাকায় মহাসড়কে গাড়ির সারি দীর্ঘ হতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর মেঘনা সেতুর কাছাকাছি আরেকটি ট্রাক দুর্ঘটনায় পড়লে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
একই রাতে দুই দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাতভর শত শত ট্রাক, বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি আটকে থাকে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দাউদকান্দিতে ট্রাক দুর্ঘটনার পরপরই মেঘনায় আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ধীরে ধীরে পুরো মহাসড়কে যানজট তীব্র হয়ে ওঠে। ট্রাকচালকরা অনেকেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাতেই গাড়ির ভেতর ঘুমিয়ে পড়েন। বর্তমানে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত যানবাহন সরানো হয়েছে। যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল চরম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় আটকে থেকে শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েন। এ সময় খাবার ও পানির সংকট দেখা দেয়।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রী সেলিম মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকাল ৬টার দিকে বাসে উঠেছি। ৯টা পর্যন্ত বাস মাত্র কয়েক কিলোমিটার এগিয়েছে। পরে নেমে হেঁটে এগোতে হয়েছে। খাবারও কিনতে পারিনি, পানি পাওয়া ছিল কঠিন।
আরেক যাত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, গরমে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে ভীষণ কষ্ট হয়েছে। সারা রাত গাড়ির ভেতর বসে থাকতে হয়েছে। শিশুটি কান্নাকাটি করেছে।
দীর্ঘ যানজটে শুধু যাত্রী নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। সময়মতো পণ্য পৌঁছাতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সোনারগাঁওয়ের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, যখনই মহাসড়কে এ ধরনের দীর্ঘ যানজট হয়, তখন আমাদের ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। কাস্টমাররা আসে না, আবার আমাদের পণ্য সময়মতো বাজারে পৌঁছায় না। এভাবে প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে প্রচুর গাড়ি জমে থাকায় পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
ট্রাফিক পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এমন পরিস্থিতি নতুন নয়। যেখানে সামান্য দুর্ঘটনাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থবিরতা তৈরি করে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় সেখানেও প্রতিদিন যানজট তৈরি হচ্ছে। ফলে একটি সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলেই চাপ অন্য সড়কেও বেড়ে যায়, এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বহুগুণে বাড়ছে।
আমার বার্তা/জেএইচ