তলিয়ে গেছে জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকে জামালপুর পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শত একর জমির ফসল, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসভবন এবং চলাচলের রাস্তা। এ কারণে বছরের বেশির ভাগ সময়ই দুর্ভোগ
কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, পৌরসভাকে বারবার জানালেও সমাধান মেলেনি। যদিও পৌরসভার প্রশাসক দাবি করেছেন, পানি নিষ্কাশনে সাময়িক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই গবেষণা কেন্দ্রটি কৃষি গবেষণা ও বীজ বর্ধনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রায় ১৮৩ একর জমির মধ্যে ১৪৯ একর গবেষণা ও বীজ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে এই জমিগুলো পানির নিচে।
সামাজিক আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, বিগত সরকারের আমলে ৮ শহর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণের কারণেই এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, নামমাত্র কাজ করে দলীয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারের ২৪৫ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।
পৌরসভার প্রশাসক এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, ‘শহরের পানি নিষ্কাশনের কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে ১০ নং ওয়ার্ডে বিজিবি ক্যাম্প ও কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকেও গুরুত্ব সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রেল লাইনের পাশে মাছ চাষের জন্য বাঁধ দেওয়ায় পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।’
গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক সহকারী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘৭৫ একর জমির চিনাবাদাম, ধান, লাউ, করলা, পেঁপেসহ নানা ফসল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। ৫০ একর জমি পানির নিচে থাকায় সেখানে আবাদ সম্ভব হয়নি। এই ক্ষতি কৃষি খাতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা দেবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘ঘরের ভিতরে পানি ঢুকেছে। রান্না-বান্না, সন্তানদের স্কুল-কলেজে যাওয়া সবকিছুতে চরম কষ্ট হচ্ছে। বই-খাতা ভিজে যাচ্ছে। ভয়ের বিষয় হলো সাপের উপদ্রব।’
স্কুলছাত্র আশিক বলেন, ‘আমরা বাসায় থাকতে ভয় পাই। ঘরে ঘরে সাপ ঢুকে পড়ে। স্কুলেও ভেজা পোশাক পরে যেতে হয়।’
কেন্দ্রের কর্মচারী সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘অফিসে যাওয়া-আসা খুবই কষ্টকর। সবচেয়ে বড় ভয় সাপের আতঙ্ক। আমরা দ্রুত এই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চাই।’
গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রটি প্রতি বছর পৌরসভাকে গড়ে ৯ লাখ টাকা কর দিয়ে থাকে। এ বছর পানির কারণে প্রায় ১০ লাখ টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই