দশ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৫:০৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

গত ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সিলেটের কুমারগাঁও ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উৎপাদনে যেতে পারছে না গুরুত্বপূর্ণ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ ছাড়া জাতীয় গ্রিড থেকেও মিলছে না চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ। একদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, অন্যদিকে সরবরাহে ঘাটতি। এ দুই সংকটের কারণে গরমে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন সিলেটের মানুষ। বিশেষ করে ভোগান্তিতে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।

কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার চেয়ে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম মিলছে। এ ছাড়া ভোল্টেজও কমে গেছে বলে জানিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচলের চেষ্টা চালিয়ে গেলেও গতকাল পর্যন্ত উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও সিলেটের চাহিদা পূরণে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কুমারগাঁওয়ে উৎপাদনে ত্রুটি দেখা দিলে প্রভাব পড়ে সিলেটে। জাতীয় গ্রিড থেকে কমিয়ে দেওয়া হয় সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ। প্রায় ১০ দিন আগে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ত্রুটি দেখা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ।

এদিকে, গত এক সপ্তাহ ধরে সিলেটে বেড়েছে গরম। ৩৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পুড়ছে সিলেট। কুমারগাঁও উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কমে যাওয়ায় এ গরমে বেড়ে যায় লোডশেডিং। সকাল, ভোর কিংবা গভীর রাত- যখন তখন চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গ্রাহকদের ভুগতে হয় লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায়। প্রচণ্ড গরমে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।

নগরীর জেলরোডের পরীক্ষার্থী অমি রহমান বলেন, একদিকে প্রচণ্ড গরম। অন্যদিকে রাত দিন সমানতালে লোডশেডিং। এ অবস্থায় পরীক্ষার প্রস্তুতি তো দূরের কথা সুস্থ থাকাটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

এদিকে, বিউবো সূত্র জানায়, সিলেট মহানগরীতে পাঁচটি ডিভিশনে ১৩টি সাবস্টেশন রয়েছে। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে প্রায়ই ফিউজ পড়ে যাওয়া, তার ছিঁড়ে পড়াসহ নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে কুমারগাঁওয়ের ২২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে।

কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কুমারগাঁও কেন্দ্র থেকে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ত্রুটি সারানোর চেষ্টা চলছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার আবদুর রশিদ জানান, ছুটির দিন ছাড়া তার জোনে প্রতিদিনের চাহিদা ১১৩ মেগাওয়াট। কয়েকদিন থেকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে গ্রাহকরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

বিউবো সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির জানান, সিলেটে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৭০০ মেগাওয়াট থাকলেও ছুটির দিন ছাড়া বাকি দিনগুলোতে মিলছে ৫০০ মেগাওয়াট। ফলে প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে ২০০ মেগাওয়াট। এতে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। কুমারগাঁও স্টেশন বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহে। এ ছাড়া বিদ্যুতের ভোল্টেজ স্থিতিশীল রাখাও কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।


আমার বার্তা/এল/এমই