অবৈধ বাসস্ট্যান্ড অপসারণের দাবিতে জবিসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমাবেশ

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১১ | অনলাইন সংস্করণ

  জবি প্রতিনিধি:

রাজধানীর পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ দোকানপাট, লেগুনা ও বাসস্ট্যান্ড অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ও অত্র এলাকার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) আয়োজনে সদরঘাট এলাকার বাহাদুর শাহ পার্কে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আযম খান সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন কর্মসূচি পরিচালনা করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এটি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্বলিত ঐতিহ্যবাহী এলাকা। এখানে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা না গেলে শিক্ষার্থীরা বিকশিত হতে পারবে না। তাই পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রেখে রায়সাহেববাজার থেকে এই এলাকায় কোনো বাস বা লেগুনা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা কর্মসূচি শেষে অংশগ্রহণকারীদের স্বাক্ষরিত দাবিসম্বলিত একটি স্মারকলিপি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পুলিশ কমিশনার বরাবর প্রদান করবো। 

সমাবেশে অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন বলেন, "রায়সাহেববাজার থেকে আর কোনো বাস বা লেগুনা এই এলাকায় প্রবেশ করবে না। পরীক্ষামূলকভাবে চালু থাকা লেগুনা ও বাসস্ট্যান্ড অপসারণ এখন থেকেই স্থায়ীভাবে কার্যকর করতে হবে। এছাড়া আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু করে কবি নজরুল সরকারি কলেজ হয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ পর্যন্ত সব অবৈধ দোকানপাট অপসারণ করতে হবে।

বাহাদুর শাহ সড়কের এই চত্বরকে ‘বিশ্বজিৎ চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বজিৎ হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী এক ঐতিহাসিক মাইলফলকের নাম। আর এই চত্বরকে ঘিরেই পুরান ঢাকা ও জবির সকল ধরণের আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।

তিনি আরও বলেন, পরিবহন ও দোকানপাটের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আমাদের শত্রু নন। তাদের অনেকের সন্তান বর্তমানে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বা ভবিষ্যতে অধ্যয়ন করবে। সুতরাং একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরিতে তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরা এসব অবৈধ দোকানপাট, লেগুনা ও বাসস্ট্যান্ড অপসারণের মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সুন্দর ও নৈতিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, এই পরিবহনগুলো নিরাপত্তার জন্য চরম সংকট তৈরি করছে। গত এক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না। আমাদের দাবি এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজ থেকে রায়সাহেববাজার থেকে কোনো গাড়ি চূড়ান্তভাবে এই এলাকায় প্রবেশ করবে না। যদি কোনো গাড়ি ঢুকে এবং কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে তার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে না।

সমাবেশে আরও বক্তব্য প্রদান করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কলেজিয়েট স্কুল, ঢাকা আইনজীবী সমিতি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরাও বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, দপ্তরের পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং পাশ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।


আমার বার্তা/এমই