ঢামেকে মরদেহ আটকে রেখে ঘুষ দাবির অভিযোগে আটক ২
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৪, ১৩:১৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক ) হাসপাতালের নতুন ভবনের মর্গে মরদেহ আটকে রেখে তা স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের মর্গের ক্লিনার মোঃ খোকন মৃতের স্বজনদের কাছে দশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেডিকেল টিম ও নিহতের স্বজনরা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক মাহিন সরকার ও মেডিকেল টিমের সদস্য নাহিদা বুশরাসহ মরদেহের স্বজনরা এই অভিযোগ করেন।
তারা জানান, মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মৃত্যু সনদের উপর ‘পুলিশ কেস’ দেখিয়ে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা দাবি করছিলেন অভিযুক্ত মর্গের ক্লিনার খোকন লাল।
অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ না দিলে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে অনুমোদন নিয়ে আসার কথা বলে হয়রানি করা হয় বলেও জানান তারা।তবে ক্লিনার খোকন এসব কথা অস্বীকার করেছেন।
আজ দুপুরের দিকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের কাছে দুইজন মৃতের স্বজনরা জানান, মরদেহ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মর্গে বা মর্গের বাইরের কেউ এভাবে টাকা চাইতে পারে না। এটা রীতিমত ঘুষ বাণিজ্যের পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।
মৃতের আত্মীয় মোঃ ফারুক জানান, গত বৃহস্পতিবার দেয়াল থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হন মিরপুরের বাসিন্দা শাহজালাল । শুক্রবার রাতে ঢামেকের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা মৃতের মরদেহ নিতে গেলে মর্গের ক্লিনার খোকন ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে এক চিকিৎসকের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে অভিযুক্ত খোকন আট হাজার টাকায় রাজি হন বলে জানান তিনি।
অপর ঘটনায় গত ৫ আগস্ট যশোরে আন্দোলনের সময় একটি ভবনে দুর্বৃত্তরা
আগুন দিলে ভবনে আটকে পড়ে সাকিব (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী দগ্ধ হন । পরে গতকাল ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সাকিবের বাবা আলাউদ্দিনের অভিযোগ তার কাছেও ছেলের মরদেহ হস্তান্তরের জন্য ১০ হাজার টাকা চেয়েছেন খোকন। তবে তিনি তা দিতে রাজি হননি।
মরদেহের স্বজনরা দাবি করেন, কোনো কারণ ছাড়াই এই দুটি মরদেহের মৃত্যুসনদে ‘পুলিশ কেইস’ উল্লেখ করে সিল মারা হয়েছে।তারা আরও জানান, এখন কোনো পুলিশের কার্যক্রম নেই। তবুও কেন পুলিশের নামে স্বাক্ষর করা হলো? তারা এভাবে মরদেহ আটকে রেখে ব্যবসা করছে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক মাহিন সরকার জানান, আমরা তাতক্ষণিক বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানকে অবহিত করি। এ সময় ঢামেক হাসপাতালের পরিচালকের নির্দেশে ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী পরিচালক আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকেই এমন কথা শুনছি। তবে কখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযুক্তরা লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব। এবং
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই হাসপাতালের বিভাগীয় নিয়ম এবং দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এই ঘটনায় গতকাল শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করলে সেনা সদস্যরা এসে অভিযুক্ত খোকন ও মর্গের সর্দারকে আটক করেন এবং আনসারের হেফাজতে দেন।
আমার বার্তা/এম রানা/জেএইচ