জামায়াতের কোম্পানির ব্যালট দিয়ে কারচুপির পাঁয়তারা চলছে: শেখ সাদী

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান

জাকসু নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর কোম্পানি থেকে নেওয়া ব্যালট ব্যবহার করে কারচুপির পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় মাওলানা ভাসানী হলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক অখ্যাত কোম্পানি থেকে ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করে। ছাত্রশিবিরকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে ভোট গণনায় কারচুপির বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার পরিবর্তে ম্যানুয়ালি ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু একই কোম্পানির ব্যালটপেপার দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রশিবির তাদের কোম্পানি থেকে আলাদা করে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হওয়ার জন্য নীলনকশা করছে বলে আমরা মনে করছি। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানালে ও নতুন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের দাবি জানালে নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবি না মেনে জামায়াতে ইসলামীর কোম্পানির ব্যালট দিয়েই ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এইরকম পক্ষপাতমূলক আচরণের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি। তারপরও আমরা আশা রাখছি নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে ও ছাত্রশিবিরের নীলনকশা বাস্তবায়নে অপচেষ্টা চালাবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মী ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান করছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন। ভোটগ্রহণের জন্য ২১টি কেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

ছাত্রদের হলের মধ্যে আল বেরুনী হলে ভোটার ২১০ জন, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৩৩ জন, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৬৪ জন, শহীদ সালাম-বরকত হলে ২৯৮ জন, মওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ জন, ১০ নম্বর ছাত্র হলে ৫২২ জন, শহীদ রফিক-জব্বার হলে ৬৫০ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ জন, ২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৩৫ জন, জাতীয় কবি নজরুল হলে ৯৯২ জন এবং তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ জন ভোটার রয়েছেন।

ছাত্রীদের হলের মধ্যে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৭৯ জন, জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ জন, প্রীতিলতা হলে ৩৯৬ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৩ জন, সুফিয়া কামাল হলে ৪৫৬ জন, ১৩ নম্বর ছাত্রী হলে ৫১৯ জন, ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে ৫৭১ জন, রোকেয়া হলে ৯৫৬ জন, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৭৯৮ জন এবং তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন ভোটার রয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫ পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৭৭ জন প্রার্থী। নির্বাচনে বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশগ্রহণ করবে। ছাত্রদের ১১টি ও ছাত্রীদের ১০টি হল মিলিয়ে মোট ২১ ভোটকেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে।

ভোটগ্রহণের জন্য ২১টি কেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনে ৬৭ জন পোলিং অফিসার (শিক্ষক) এবং ৬৭ জন সহায়ক পোলিং অফিসার (কর্মকর্তা) নিয়োগ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ভোট গণনা করা হবে।

নির্বাচন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ১৫০০ পুলিশ, সাত প্ল্যাটুন বিজিবি ও পাঁচ প্ল্যাটুন আনসার ক্যাম্পাসের পরিসীমায় মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে যে কোনো অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় আনসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করবে।


আমার বার্তা/এমই