ঢাবির সাবেক দুই উপাচার্যসহ ১৩ জনের নামে মামলা

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ১৯:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। ফাইল ছবি

সাত বছর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সাবেক দুই উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং তৎকালীন প্রক্টর গোলাম রাব্বানীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।  

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং তৎকালীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক রাশেদ খাঁন বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন।

 রোববার (৪ মে) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর।  

এজাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান, ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাকিব হাসান সুইম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি পরে উপাচার্য হওয়া অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ঢাবির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদকে আসামি করা হয়েছে।  

এর বাইরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে আনুমানিক পাঁচ শতাধিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।  

মামলার এজাহারে রাশেদ খাঁন বলেন, ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ অতর্কিত হামলা ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলসহ আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যোগ দেন।  

তিনি উল্লেখ করেন, হঠাৎ ৯ এপ্রিল রাত ১টার দিকে ‘ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ’ লেখা টিশার্ট পরিহিত যুবকরা উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এস এম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।  

রাশেদ খাঁন বলেন, ১ জুলাই শেখ হাসিনাকে কটূক্তির মামলায় আমাকে (রাশেদ খাঁন) গ্রেপ্তারের পর ৮ জুলাই উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। দুই মামলায় আদালত আমাকে ১৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে পাঠায়। পুলিশ হেফাজতে ও রিমান্ডে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।  

কোনো অন্যায় না করেও ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ মামলা দুটিতে জেল ও রিমান্ড খাটতে হয়েছে জানিয়ে এখন শাহবাগ থানায় মামলাটি করেছেন বলে উল্লেখ করেন রাশেদ।  

মামলার এজাহার দায়ের শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক,  সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়েও তখন ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। এছাড়া আল নাহিয়ান খান জয় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল।  

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে আমরা মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে আমাদের মামলা নেওয়া হয়নি।  

রাশেদ খাঁন আরও বলেন, এই হামলার ঘটনায় তখন একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। আমরা সব তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার পরও তা আলোর মুখ দেখেনি। সেদিন কারা আগুন দিয়েছিল, তা খুঁজে বের করতেই এই মামলা করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, আমরা শুনেছিলাম, তখন আমরা (ডাকসু নির্বাচনে) ১১টি পদে জয়ী হয়েছি। তবে আমাদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। এই কারচুপি এবং হামলার তদন্তে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। তারা এই প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি করেছেন।  


আমার বার্তা/এমই