জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ
জবি প্রতিনিধি:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে পুষ-পুত্তলিকা দাহ করেছে এবং ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার কতৃক শিক্ষার্থী হেনস্তার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবি জানান তারা।
বিক্ষোভ মিছিলে তারা বলেন, "গিয়াস উদ্দিন চায় কি, গোলামি আর দালালি" ; "গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি" ; "জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো" ; "এক দুই তিন চার, রেজিস্ট্রার তুই গদি ছাড়" ; "কুয়েট শিক্ষা নে, গদি তুই ছাইড়া দে" এসব স্লোগান দেন।
এসময় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রের যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর আনজুম সাম্য বলেন, রেজিস্ট্রার একজন সাম্রাজ্যবাদী কলোনিয়ালিস্ট। আমরা কলোনিয়ালিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই না। মেরুদণ্ডহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই না। আমরা এরপর অপ্রত্যাশিত কিছু হলে, তার জন্য দায়ী থাকতবে প্রশাসন।
শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহৃবায়ক মাসুদ রানা বলেন, আওয়ামী দোসর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এখনো সক্রিয়। আমরা মনে করেছিলাম, ৫ আগস্টের পরে তারা আর থাকবে না। ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসীরা আবার সক্রিয় হয়েছেন। এই রেজিস্ট্রার হলেন সেই স্বৈরাচারী সরকারের দোসরের একজন। ভালোই ভালো নিজের ডিপার্টমেন্টে ফিরে যান। সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান। ফ্যাসিস্টদের কোন প্রশাসনিক জায়গায় থাকতে দিবো না।
শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে, কারণ সব জায়গায় অযোগ্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
একজন একাডেমিক ব্যক্তিকে কেন রেজিস্ট্রারের জায়গায় বসানো হয়েছে, সেই উত্তর দিতে হবে।
ক্ষমতা যদি আপনার হাতিয়ার হয়, তাহলে ছাত্ররা ইতিহাসের আশ্রয় নিবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দিতে হবে। অব্যাহতি দেয়া না হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বিষয়ে ভুক্তভোগী ইভান তাহসীভ বলেন, আমার এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরির অভিযোগ জানাতে আমরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে যায়। আমি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজ থেকে সাইকেল চুরির ঘটনা বললে, রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গ্যারেজ নেই।' শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের আন্ডার গ্রাউন্ডের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওনি নিতে পারবে না বলে জানান। শিক্ষার্থীরা টিউশনির জমানো টাকায় সাইকেল কিনে, সেই সাইকেল নিয়ে টিউশনি করে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসে শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যান ইভান তাহসীভসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসময় রেজিস্ট্রার এর সমাধান না করে উল্টো অভিযোগকারীর উপর চড়াও হয়ে রুম থেকে বের করে দেন।
তিনি বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের মালামালের নিরাপত্তা দিতে পারবো না, মালামাল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি খাবে, কোথায় থাকবে? এই দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায়ভার নিতে পারবে না। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, "বের হয়ে যাও, ওকে বের করে দাও। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো পড়তে আসো এলাকায় পড়লেই তো পারতে।"
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রশাসনের। যে শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন আমি তার সাথে কথা বলেছি। আমরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নিব।
আমার বার্তা/সাদিয়া সুলতানা রিমি/এমই