ইবিতে স্বাধীনতাবিরোধীর নামে হলের নাম, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৫, ১৯:৪২ | অনলাইন সংস্করণ

  ইবি সংবাদদাতা:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ৪টি আবাসিক হল ও একটি একাডেমিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করে শাহ আজিজুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, শাহ আজিজুল হক চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী। তার নামে ইবির হলের নাম পরিবর্তন করতে হবে।

এদিকে এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সংসদ। বুধবার (৫ মার্চ) এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক এই নিন্দা জানান। একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মাওলানা ভাসানীর নামে নামকরণের আহ্বান জানান তারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, শাহ আজিজুর রহমানের মতো একজন্য চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর নামে আবাসিক হলের নামকরণ জাতির জন্য এক কলঙ্কজন সিদ্ধান্ত। একই সাথে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা পরিপন্থীও। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের হাতে লুট হয়ে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের বৈষম্যহীন দেশ গড়ার শপথই ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী শাহ আজিজুর রহমানের নামে আবাসিক হলের নামকরণের মধ্য দিয়ে ইবি প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বলে আমরা মনে করি।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, শাহ আজিজুর রহমান ছিলেন একাত্তরে পাকিস্তান ন্যাশনাল লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আবদুল মোতালেব মালিকের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্য হন এবং রাজস্বমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধের সময় পাকিস্তান কর্তৃক জাতিসংঘে প্রেরিত প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি জাতিসংঘে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করলেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে।

শাহ আজিজুর রহমান জাতিসংঘে দেওয়া বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পাকিস্তানি সৈন্যরা পূর্ব পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে অন্যায় কিছু করেনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের নামে সেখানে যা চলছে, তা হলো ভারতের মদদপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের উচিত সেটাকে পাকিস্তানের ঘরোয়া ব্যাপার হিসেবে গ্রহণ করা।” এছাড়াও তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়ে ছিলেন। এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তির নামে আবাসিক হলের নামকরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্র ইউনিয়ন। তারা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাই।’

তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ, ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী ও এদের মানুষের অধিকার আদায়ের অগ্র নায়ক মাওলানা ভাসানীর নামে আবাসিক হলের নামকরণের দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৪টি আবাসিক হল ও ১টি ভবনের নাম পরিবর্তন করা হলো কিন্তু সেখানে মাওলানা ভাসানীর মতো জাতীয় নেতার নামে কোনো স্থাপনা রাখা হয়নি। যা দুঃখজন। আমরা ইবি প্রশাসনের কাছে রাজাকারের নাম পরিবর্তন ও মাওলানা ভাসানীর নামে আবাসিক হলের নামকরণের আহ্বান জানাচ্ছি।

 

আমার বার্তা/আজাহারুল ইসলাম/এমই